প্রতীকী ছবি
জেলা জুড়ে আমপানের টাকা ফিরিয়ে দিলেন ১৮৫ জন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শাসক দল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান বা সদস্যদের পরিবারের লোক, আত্মীয় অথবা ঘনিষ্ঠ বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই তালিকায় বিজেপির কিছু লোকজনেরও নাম আছে। প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেই এই টাকা ফিরিয়ে দিতে হয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
গত ২০ মে আমপান ঘূর্ণীঝড়ে বাড়ির কোনও ক্ষতি না হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম উঠে গিয়েছিল বিভিন্ন এলাকায় পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন নেতানেত্রীদের পরিজন ও ঘনিষ্ঠদের। এঁদের বেশির ভাগেরই পাকা বাড়ি, অথচ তাঁরা ক্ষতিপূরণের টাকাও পেয়ে গিয়েছিলেন। তদন্তে বিষয়টি সামনে চলে আসার পরেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে চাপ দেওয়া হতে থাকে। পাঠানো হয় নোটিসও। অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ়’ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় বাসিন্দারা টাকা ফেরতের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। রাস্তায় নামে বিরোধী দলগুলিও। প্রশাসনের কাছেও প্রচুর অভিযোগ আসতে থাকে।
এর পরে মুখ্যমন্ত্রী কড়া অবস্থানের নির্দেশ দেওয়ার পরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে প্রশাসন। শাসক দলের জেলা নেতারাও টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য স্থামীয় নেতাদের চাপ দিতে থাকেন। যেমন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস তাঁর বিধানসভা এলাকায় দলের এমন লোকজনকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর সিংহ একাধিক পঞ্চায়েত প্রধানকে শো-কজ় পর্যন্ত করেন। চাপে পড়ে বিজেপিও টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় তাদের পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের।
অতিরিক্ত জেলাশাসক নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “যাঁদের ঘরের কোনও ক্ষতি হয়নি অথচ ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন বলে তদন্তে জানা যাচ্ছে, তাঁদের সকলকেই টাকা ফেরত দিতে হবে।’’