Corruption

হকার অনুদানের তালিকায় দুর্নীতি

শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিকদের একাংশ তালিকা দেখিয়ে জানিয়েছেন, তালিকায় এমন একাধিক মহিলার নাম রয়েছে যাঁরা নিপাট গৃহবধূ। আবার এক জনের নাম রয়েছে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন।

Advertisement

মনিরুল শেখ

চাকদহ শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজোর মুখে সরকার হকারদের এককালীন দু’ হাজার টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করেছিল। পুর এলাকার হকারদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পুরসভাগুলিকে। সেই তালিকা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠা শুরু হয়েছে চাকদহে।

Advertisement

এর আগে আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বহু জায়গায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বদলে টাকা এসেছিল অপেক্ষাকৃত অর্থবানদের কাছে, যাঁদের ঝড়ে কোনও ক্ষতি হয়নি। এ বার সেই রকম দুর্নীতির ছায়া দেখা যাচ্ছে অনুদানের জন্য হকারদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ওই তালিকা তৈরি করা হয়। মূলত পুরকর্মী ও কিছু নেতার ঘনিষ্ঠরাই বেশি আবেদন করেন। আবেদনের ভিত্তিতে প্রাথমিক একটি তালিকা তৈরি হয়। আর সেই তালিকা প্রকাশ হতেই হট্টগোল শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এমন বহু লোক অনুদানের জন্য আবেদন করেছেন যাঁরা কস্মিনকালেও কোনওদিন হকারি করেননি বা হকার ছিলেন না। অর্থাৎ, প্রকৃত হকারদের অনেকে অনুদান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

Advertisement

শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিকদের একাংশ তালিকা দেখিয়ে জানিয়েছেন, তালিকায় এমন একাধিক মহিলার নাম রয়েছে যাঁরা নিপাট গৃহবধূ। আবার এক জনের নাম রয়েছে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। এক কাঠ ব্যবসায়ীও নাম রয়েছে হকারের তালিকায়। কী করে এমন হল?

পুরসভার এক পদস্থ কর্তা জানাচ্ছেন, অত্যন্ত তাড়াহুড়োর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই আবেদনের নামগুলি যাচাই করা পুরসভার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই যাচাইয়ের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের উপর। তবে পুলিশকেও তালিকা দেওয়া হয়েছে অনেক পরে। করোনা, পুজো বিধি ও দৈনন্দিন অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে পুলিশের পক্ষেও তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিগের প্রকৃত পরিচয় ঠিকঠাক যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তাই প্রাথমিক তালিকা প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থাতেই কলকাতার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। তাতেই গোলমাল হয়েছে।

চাকদহ পুরসভার এক কর্তা দাবি করেছেন, এটা রাজনৈতিক ভাবে পরিকল্পনামাফিক কোনও ভুল করা হয়নি। যাচাইয়ের অভাবেই তালিকায় বহু অবাঞ্ছিত নাম ঢুকেছে। এর জন্য পুরকর্মীদের সতর্কতার অভাবও রয়েছে।

বিজেপি অবশ্য এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে আসরে নেমে পড়েছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্রনাথ রায় অভিযোগ করেছেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন তো সব প্রকল্পের টাকাই নিজেদের পকেটে ভরে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।’’ চাকদহ পুরসভার প্রশাসক ধীমান বাড়ৈ আবার বলছেন, ‘‘আবেদন যে কেউ করতেই পারেন। তবে পুলিশেরই এমন ভাবে তালিকা খতিয়ে দেখা উচিৎ যাতে চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে কোনও প্রশ্ন না ওঠে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement