পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অবৈধ তেল ব্যবসায়ীর। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
মামলা করার হুমকি দিয়ে অবৈধ কেরোসিন ব্যবসায়ীর থেকে মাসে হাজার হাজার টাকা ঘুষ নিচ্ছেন পুলিশকর্তা! এমনই অভিযোগ উঠেছে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্র্যাঞ্চের ডেপুটি পুলিশ সুপার অমিতাভ কোনারের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন বাবর মল্লিক নামে নদিয়ার চাপড়ার এক বাসিন্দা, যিনি অবৈধ ভাবে কেরোসিন তেলের ব্যবসা করেন।
বাবর চাপড়ার গোখুরাপোতা-নদীর ধার পাড়ার বাসিন্দা। পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন একাধিক দফতরে। সেই তালিকায় রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, এডিজি দক্ষিণবঙ্গ, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার, নদিয়ার জেলাশাসক, কল্যাণীর ডিআইজি, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এবং নদিয়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতিও। বাবরের দাবি, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে চাপড়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কেরোসিন তেল কিনে গ্রামে গ্রামে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেন। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন, মাস তিনেক আগে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্র্যাঞ্চের ওই কর্তা তাঁকে নিজের কোয়ার্টারে ডেকে সরাসরি প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা দিতে বলেন। দাবি মতো টাকা না দিলে তিনি বাবরের নামে মিথ্যা মামলা করে জেল খাটানোর হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। বাবরের দাবি, পরে তাঁর মতো এমন পেশার সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনের নামে মামলাও করা হয়। তাঁর আরও দাবি, পরবর্তী কালে অমিতাভ প্রতি মাসে তাঁর কাছ থেকে আট হাজার টাকা আদায় করেন। ‘সুবিচার’ পেতে এ নিয়ে বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্র্যাঞ্চের ডেপুটি পুলিশ সুপারের সঙ্গে। প্রশ্ন শুনে অমিতাভ জানিয়ে দেন, এ ব্যাপারে যা বলার কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলবেন। তবে পুলিশ সুপারকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। যদিও অমিতাভ ঘনিষ্ঠদের দাবি, গোটা পুলিশ জেলা জুড়েই সম্প্রতি অবৈধ কেরোসিন তেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। চাপড়ায় এমন ৭২ ব্যারেল কেরোসিন তেল উদ্ধার হয়েছে। যার বাজারদর সাত-আট লক্ষ টাকা। মঙ্গলবারও করিমপুরে এক হাজার ৩০০ লিটার এমন কেরোসিন তেল উদ্ধার হয়েছে। জনসাধারণকে রেশনে যে তেল দেওয়া হচ্ছে তা ফড়েদের হাতে চলে যাওয়া রুখতে ভবিষ্যতেও এমন অভিযান চালানো হবে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। অমিতাভ ঘনিষ্ঠদের দাবি, ভীমরুলের চাকে ঢিল মেরেছেন বলেই অমিতাভর নামে এ সব অভিযোগ করা হচ্ছে।