নিহতের আত্মীয়েরা। ইনসেটে, রাকেশ মণ্ডল। ছবি: প্রণব দেবনাথ
টোটো ভাড়া আছে জানিয়ে বেড়িয়েছিলেন বাড়ি থেকে। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। রাত গড়িয়ে সকালে উদ্ধার হল টোটো চালকের দেহ। শরীরে ধারালো অস্ত্রে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ জানায়, তিনি খুন হয়েছেন বলেই অনুমান করা হচ্ছে। নিহতের নাম রাকেশ মণ্ডল (২৮)। মঙ্গলবার সকালে তাহেরপুর থানার খামার শিমুলিয়া এলাকায় তাঁর মৃতদেহ মেলে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শান্তিপুর থানার চাপাতলায় বাড়ি হলেও বীরনগর শহরের খাঁপাড়ায় মামাবাড়িতেই মানুষ রাকেশ মণ্ডল। মাধ্যমিকের বেশি আর পড়া হয়নি। বাবা দীনেশ মণ্ডল দিনমজুর, মা শোভনা গৃহবধূ। মামা সনৎ পাল বীরনগর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। বছর চারেক ধরে টোটো চালানোর কাজ করচিলেন রাকেশ। ক’মাস আগে টোটো খারাপ হয়ে যাওয়ায় কিছু দিন বন্ধ ছিল চালানো। মাস ছয়েক আগে একটি পুরনো টোটো কিনে চালানো শুরু করেন।
বাড়ির লোকজন জানাচ্ছেন, সোমবার বিকেলে রাকেশ জানান ভাড়ার জন্য জালালখালি যেতে হচ্ছে। সেখানে কেউ বা কারা যাবেন ধানের বীজ আনতে। বিকেলে বাড়ি থেকে বেরোলেও রাত হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। এ দিন সকালে তাঁরা যোগাযোগ করেন তাহেরপুর থানায়। সেই সময়েই তাঁরা জানতে পারেন, খামার শিমুলিয়া এলাকায় অঞ্জনা নদীর ধারে একটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। পরে তাঁরা সেই দেহ শনাক্ত করেন। রাকেশের মা শোভনা বলেন, “ছেলে সাড়ে ৮টার মধ্যে বাড়ি ফিরত। সেই সময় পার হয়ে যাওয়ার পরে ফোন করে দেখি, সুইচড অফ। পরে জানতে পারি ছেলে খুন হয়েছে।”
তাহেরপুর থানার একেবারে শেষ প্রান্তে বাদকুল্লা ১ পঞ্চায়েতের খামার শিমুলিয়া এলাকায় অঞ্জনা নদীর ধার থেকে যেখানে দেহটি উদ্ধার হয়, তার কাছেই কোতোয়ালি থানার জালালখালি। সেখানে ভাড়া যাওয়ার কথা বলেই বেরিয়েছিলেন রাকেশ। নদীর ধারে চাষের খেত, বাগানের মাঝ দিয়ে মাটির রাস্তা। সেখানে নদীর পাড়ে নির্জন এলাকাতেই দেহটি পড়েছিল। পাওয়া যায়নি রাকেশের টোটো। উধাও তাঁর মোবাইল ফোনও। ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল শরীরে। কারা তার টোটো ভাড়া নিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট হয়নি। ভাড়া নেওয়ার পর টোটো ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে খুন, নাকি পুরনো কোনো শত্রুতার জেরে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়নি।
পরে ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও (রানাঘাট)-সহ পদস্থ অফিসারেরা। রানাঘাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রানাঘাট) রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”