চলছে খেলা। মঙ্গলবার নবদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র
যেমন গর্জন ছিল তার কিছুই বর্ষণ হল না। অথচ, সকার কাপে মঙ্গলবারের ম্যাচ নিয়ে প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া।
নবদ্বীপ মিউনিসিপ্যাল সকার কাপে মিলন সঙ্ঘ বনাম রয়েল ক্লাবের কোয়াটার ফাইনাল নিয়ে সমাজমাধ্যমে যুযুধান দুই পক্ষের চাপানউতোরের খেলা তিন দিন আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। বাতাসে ভাসছিল কলকাতা মাঠের একঝাঁক বিদেশি খেলোয়াড়ের নাম। ধরেই নেওয়া হয়েছিল এটাই বকলমে এ বারের সকার কাপের ফাইনাল! সেই মতো উপচে পড়েছিল দর্শক। কিন্তু গোটা খেলা জুড়ে সেই সব ময়দান কাঁপানো দুধর্ষ খেলোয়াড়দের তেমন ক্রীড়া নৈপুণ্যের ঝলক দেখতে পেলেন না ফুটবলপ্রেমী দর্শকেরা।
মঙ্গলবার নিতান্ত সাদামাটা একটি ফুটবল ম্যাচে ১-০ গোলে জিতল মিলন সঙ্ঘ। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট তিনেক আগে ম্যাচের একমাত্র গোলটি হয়। প্রথম থেকেই তুলনায় বেশি চাপ ছিল মিলন সঙ্ঘের। মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণে গিয়েছে রয়েল ক্লাব। একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। দ্বিতীয়ার্ধের গোড়া থেকে খেলার দখল নিতে শুরু করে মিলন সঙ্ঘ। একাধিক নিশ্চিত শট বাঁচিয়ে দেন রয়েলের গোলরক্ষক ভাস্কর রাউত। খেলা শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন মিলন সঙ্ঘের হয়ে খেলতে নামা
অ্যান্ড্রূ উইলসন।
এ দিনের ম্যাচের কয়েক দিন আগে থেকে দু’টি নাম নিয়ে প্রচুর আলোচনা, চূড়ান্ত নাটক। সেই দুই বিদেশি খেলোয়াড় ক্রোমা এবং কামুর খেলা কোনও ভাবেই দর্শকদের নজর কাড়েনি। কলকাতার ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডানে খেলা এবং পিয়ারলেসকে কলকাতা লিগ-চ্যাম্পিয়ন করার মুখ্য কারিগর তুখোড় ফুটবলার ক্রোমা ও কামু মঙ্গলবার মিলন সঙ্ঘের হয়ে খেলতে আসছে বলেই ময়দানে খবর ছিল। মিলন সঙ্ঘ ফেসবুকে লিখেছিল— ‘২১ তারিখে জোড়া চমক।’ সেই থেকে এমন অনুমান। নাটক চরমে ওঠে সোমবার। ওই দিন অনেক রাতে জানা যায়, মঙ্গলবার ওই দুই বিদেশি খেলবেন রয়েল ক্লাবের হয়ে।
যদিও মিলন সঙ্ঘের তরফে এ দিন বলা হয়, তাঁরা আদৌ ক্রোমা বা কামুর জন্য চেষ্টা করেননি। বরং এ দিন মাঠে দুই দল মিলিয়ে জনাদশেক বিদেশির মধ্যেও নজর কেড়েছেন মিলন সঙ্ঘের রাজা শেঠ এবং রয়েল ক্লাবের সৈকত সাহা রায়।
এমন একটি ম্যাচ জিতে স্বভাবতই খুশি মিলন সঙ্ঘ। যদিও এখনও কোন উচ্ছ্বাস তারা দেখাতে রাজি নয়। ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক মৈনাক দত্ত বলেন, “জিতে খুব ভাল লাগছে। তবে আমরা তাকিয়ে আছি ফাইনালের দিকে।” অন্য দিকে বহু অর্থব্যয় করেও প্রার্থিত জয় না পাওয়ায় হতাশ রয়েল ক্লাবের সমর্থকেরা। এ বারের মতো সকার অভিযান শেষ তাদের। এই নিয়ে সকার কাপে তিন বারই মিলন সঙ্ঘের কাছে পরাজিত হতে হল রয়েল ক্লাবকে।