আখের খেত। —ফাইল চিত্র।
এত দিন আখ এবং আলু চাষের শস্য বিমা করতে কৃষকদের প্রিমিয়ামের একটি অংশ দিতে হত। এ বার থেকে আলু আর আখ চাষে শস্য বিমার জন্য কৃষকদের আর প্রিমিয়াম দিতে হবে না। অন্য ফসলের মতো আখ এবং আলুর বিমা নিখরচায় করা যাবে— কৃষি দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
কৃষি দফতরের কর্তারা জানান, খরিফ মরশুমের শস্য বিমার আবেদন গ্রহণের কাজ ৩০ নভেম্বর শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে রবি মরশুমের শস্য বিমার আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। রবি মরসুমে শস্য বিমার কিছু ফসলের ক্ষেত্রে আবেদন গ্রহণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে এবং কিছু ফসলের ক্ষেত্রে আবেদন গ্রহণের সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লকে ব্লকে আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে বলে কৃষি দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মোহনলাল কুমার বলেন, ‘‘এত দিন আখ এবং আলু বাদে বাকি ফসলের শস্য বিমা নিখরচায় করা হত। বাণিজ্যিক ফসল আলু ও আখের বিমার প্রিমিয়ামের একটা অংশ কৃষককে দিতে হত। এ বারে আখ এবং আলুর সেই প্রিমিয়াম আর দিতে হবে না।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রবি মরশুমে মুর্শিদাবাদ জেলায় দশটি ফসলের শস্য বিমা করানো হবে। গরম ও শীতের ভুট্টা, ছোলা, মসুর, সর্ষে এই সব ফসলের শস্য বিমা গোটা জেলা জুড়ে করা যাবে। জেলার ২৬টি ব্লকের মধ্যে শুধু সুতি ২ ব্লক বাদে গম চাষের শস্য বিমা করানো যাবে।
রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক, সুতি ২ ব্লক এবং শমসেরগঞ্জ ব্লক বাদে জেলার বাকি ব্লকগুলিতে বোরো ধানের শস্য বিমা করানো যাবে। রঘুনাথগঞ্জ ১ ও ২ ব্লক, শমশেরগঞ্জ এবং সাগরদিঘি ব্লক বাদে জেলার বাকি ব্লকগুলোতে আলু চাষের ক্ষেত্রে শস্য বিমা করানো যাবে। জেলার ১৪ টি ব্লকে আখ চাষের শস্য বিমা করানো যাবে। সূত্রের খবর, সর্ষে, গম, ভুট্টা, ছোলা, মসুর, আলু, আখের ক্ষেত্রে শস্য বিমার সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। বোরো ধানের ক্ষেত্রে শস্য বিমার আবেদন করা যাবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। গত বছর রবি মরশুমে ৮ লক্ষ কৃষক শস্য বিমায় নাম লিখিয়েছিলেন। এ বছর খরিফ মরশুমে ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার কৃষক শস্য বিমায় নাম লিখেছেন। খরিফ মরসুমে এই জেলায় ধান এবং ভুট্টা চাষের শস্য বিমা করানো হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের কৃষকেরা জানিয়েছেন, শুধু শস্য বিমা করানো হবে না বিমার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের টাকা মিলবে? তাঁদের দাবি, গত বর্ষায় বন্যার জেরে কান্দি মহকুমার সব ব্লকে এবং বহরমপুর ব্লকের একাংশের চাষ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষ করে ধান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার এখনও ক্ষতিপূরণ মিলেনি। তবে কৃষি দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, গত বর্ষায় যে ফসলের ক্ষতি হয়েছে তার সমীক্ষা হচ্ছে। সমীক্ষা শেষ হলে জানা যাবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও।