রুপালি দাস
নার্সিংহোমে রোগী মৃত্যুর জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রানাঘাট।
সে তাপ থিতিয়ে আসার আগে, মঙ্গলবার, কল্যাণীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর পিছনে ফের উঠল চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’র অভিযোগ।
এ দিন, তা নিয়ে মৃতার পরিবারের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিলেও, শহর জুড়ে ছড়িয়ে থাকল নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।
বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং কল্যাণীর এসডিও-র কাছেও অভিয়োগ দায়ের হয়েছে এ দিন সন্ধ্যায়। হাসপাতালের এক চিকিৎসক এবং ওই নার্সিংহোম মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন প্রসূতির বাড়ির লোক।
দিন কয়েক আগে রানাঘাটে একটি নার্সিংহোমে দুই মহিলার মৃত্যুকে ঘিরে ধুন্ধুমার বেধেছিল। ভাঙচুর হয়েছিল নার্সিংহোম এবং দুই চিকিৎসকের বাড়ি। তবে এ দিন কল্যাণীতে পুলিশ সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় তেমন অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।
চাকদহ ইছাপুরের বাসিন্দা রূপালি দাস (৩৩) কল্যাণীর স্ত্রীরোগ বিশেষ়জ্ঞ জিবাঙ্কুশ বিশ্বাসের কাছেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। সোমবার, রূপালি তাঁর অধীনে কল্যাণীর একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। এ দিন সকালেই অস্ত্রোপচার করে তাঁর একটি সন্তান হয়। তাঁর বাড়ির লোকের দাবি, মা ও সন্তান ভাল আছে দেকে বাড়ি পিরে গিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের লোকেরা।
রুপালির এক আত্মীয় অসীম ঘোষ জানান, মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁদের ফোন করে জানানো হয়, রূপালির অবস্থা খারাপ। তাঁরা এসে দেখেন, ওই মহিলা তখন খাবি খাচ্ছেন। অসীম বলেন, ‘‘এসে দেখি, রুপালির হাতে-পায়ে কালশিটে দাগ। ওই ঘরের অন্য রোগীরা জানান, রাতে তাঁকে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছিল।’’ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অসীমের বক্তব্য, ‘‘রোগীর কী হয়েছে, কী অস্ত্রোপচার হবে, কোনও উত্তর পাইনি। কিছুক্ষণ পরেই জানানো হয়, রোগী মারা গিয়েছেন।’’ এর পরে আর জিবাঙ্কুশবাবুকে পাওয়া যায়নি। এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে কল্যাণী থানায় গিয়ে জিবাঙ্কুশবাবু এবং ওই হাসপাতালের মালিক শুধাংশু রায়ের বিরুদ্ধে এইআইআর করেন রূপালির বাড়ির লোক। হাসপাতালের মালিক শুধাংশু রায় বলেন, ‘‘রোগীর হাইপার টেনশন ছিল। তার রক্ত চাপ কমে গিয়েছিল।’’ তবে কী কারণে মৃত্যু তা তিনি বলতে পারেননি তিনি।