প্রতীকী ছবি
দলেরই এক নেত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে যাওয়ার জেরে নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শিবশঙ্কর মণ্ডলকে। এই ঘটনার পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এখনও বিজেপির নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতিহীন। এই অবস্থায় শোনা যাচ্ছে, ওই পদে ফিরতে পারেন প্রাক্তন সভাপতি শশধর নন্দী। মাস ছয়েক আগে আচমকা শশধরবাবুকে সরিয়ে নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সদ্য অপসারিত শিবশঙ্কর বাবুকে।
এমনিতেই নদিয়ায় বিজেপি অন্তর্কলহে নাজেহাল। করিমপুর উপ-নির্বাচনে ভরাডুবির পর সেই ফাটল আরও প্রকট হয়েছে। চলছে পারস্পরিক দোষারোপ, চাপান-উতোর। অবস্থা সামাল দিতে নদিয়ায় বিজেপির দু’টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন জেলা সভাপতিরা যার-যার এলাকার দায়িত্বভার বুঝে নিচ্ছেন। গত ১৫ ডিসেম্বর বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব নেওয়া পর আশুতোষ পাল মঙ্গলবার বিভিন্ন মণ্ডল সভাপতিদের জেলায় ডেকেছিলেন। কিন্তু নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলে এই মুহূর্তে কোনও সভাপতি না-থাকায় সেখানকার প্রতিনিধি হিসাবে নতুন জেলা সভাপতির কাছ থেকে ডাক পেয়েছিলেন শশধর নন্দী। তাতেই তাঁর মণ্ডল সভাপতির পদে ফেরত আসার জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
গত জুলাই মাসে হঠাৎ করেই বদলে গিয়েছিল বিজেপির নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি। শশধর নন্দীর জায়গায় সভাপতি হয়েছিলেন শিবশঙ্কর মণ্ডল। সে সময় তিনি বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এবং তাঁর মা পুলিশের কাছে শশধরবাবুর বিরুদ্ধে ভাঙচুর এবং মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতে শশধর নন্দীকে মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার পিছনে দলের অভ্যন্তরীণ কলহের ভূমিকা ছিল বলে রাজনৈতিক মহলে তুমুল চর্চা হয়। শিবশঙ্কর মণ্ডল ছিলেন বিজেপির তৎকালীন নদিয়া উত্তরের সভাপতি মহাদেব সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মহাদেববাবু বিষয়টি “রুটিন পরিবর্তন” বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
তিনিই কি আবার বিজেপির নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি হচ্ছেন? জানতে চাওয়া হলে শশধরবাবুর জবাব, “সেটা জেলা নেতৃত্ব বলতে পারবেন। মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে প্রথমবার আলোচনায় আমাকে দক্ষিণ মণ্ডলের প্রতিনিধি হিসাবে ডেকে পাঠানোয় আমি খুশি, এইটুকুই বলতে পারি। আর আগে আমি ২০১৬ থেকে টানা তি নবছর ওই দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যদি দল আমাকে কোনও দায়িত্ব দেয় তা নিশ্চয় পালন করব।” আর আশুতোষ পাল বলেন, “এ সব বলার সময় আসেনি। দলীয় নেতৃত্ব যাকে ঠিক করবেন তাঁকেই সভাপতি করা হবে। যথা সময়ে তাঁর নাম ঘোষণা করা হবে।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা কমিটি গঠন পর্ব শেষ হলেই দ্রুত নবদ্বীপের মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা হবে। সামনেই নবদ্বীপ এবং কৃষ্ণনগরে পুরভোট। সে কথা মাথায় রেখে দুই জায়গায় স্থানীয় সংগঠন ঢেলে সাজা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।