তির কারণে হলদিয়া ফরাক্কা বাদশাহি সড়কের উপর জল। বুধবার বড়ঞাতে। ছবি: কৌশিক সাহা।
টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়েছে। তাতে ডুবেছে কৃষি জমি থেকে একাধিক গ্রামের রাস্তা। জলমগ্ন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছতে ও নজরদারিতে উদ্যোগী হয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের।
জলবন্দি হয়ে পড়েছেন বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জাওহাঁড়ি, ভড়ঞা, সোনাভারুই, তারাপুর, মামদপুর গ্রামের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে জল বেড়ে গিয়ে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কের বড়ঞা থানার মামদপুর এলাকার সড়কটি জলে ডুবে যায়। সেই কারণে ওই সড়কের উপর দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
কান্দির মহকুমাশাসক উৎকর্ষ সিংহ বলেন, ‘‘কুঁয়ে নদীর জলস্তর নতুন করে বাড়েনি, কিন্তু সেই ভাবে জল কমছেও না। বাদশাহি সড়কের উপরে জল থাকার কারণে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’’
একই সঙ্গে খড়গ্রাম ব্লকের ঝিল্লি, পদমকান্দি ও পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দ্বারকা নদীর জলস্ফীতির কারণে ডুবেছে। ঝাঝরা, সর্বমঙ্গলাপুর ও পদমকান্দি এলাকায় যাতায়াতের রাস্তায় জল জমে আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পিডবোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ব্লক প্রশাসনের দাবি, এ দিন বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের মুড়ি, চিঁড়ের মতো শুকনো খাবার দেওয়ার সঙ্গে চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। খড়গ্রামের বিডিও মিলনী দাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এলাকার বাসিন্দাদের ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে৷ কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার জল সরে যাওয়ার পরে কৃষি জমির ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।’’
মঙ্গলবার বড়ঞা থানার সোনাভাড়ুই গ্রামের রাস্তায় জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালিকার। পরে ওই গ্রামে যাতায়াতের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্পিডবোটের ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার ফের আরও একটি স্পিডবোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান বড়ঞার বিডিও গোবিন্দ দাস। এ দিন এলাকার বাসিন্দাদের ত্রাণের দ্রব্যসামগ্রী বিলি বণ্টন করার সময় বিডিও নিজে এলাকায় হাজির ছিলেন। পরিবার প্রতি শুকনো মুড়ি, চিঁড়ে, খাবার জল দেওয়ার সঙ্গে ছয় কেজি করে চাল পৌঁছে দেওয়া ব্যবস্থা করে ব্লক প্রশাসন।
সুন্দরপুরের প্রধান সাহিনা বিবি বলেন, ‘‘জল কমছে না এটাই চিন্তার। যে সমস্ত গ্রাম জলবন্দি অবস্থায় আছে প্রত্যেক গ্রামে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মাহে আলম সোনাভাড়ুই গ্রামের বাসিন্দা মৃত নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে মৃতের বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। মাহে বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে ওই পরিবার যাতে সহযোগিতা পায় সেটা প্রশাসনিক ভাবে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দু:খজনক।’’
উৎকর্ষ বলেন, ‘‘কুঁয়ে ও দ্বারকার জলে বেশি ক্ষতি হচ্ছে কৃষি জমিতে। কৃষি দফতরের কর্তাব্যক্তিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।’’