Krishnanagar

নিয়ম মানবে কি পুলকার? আজ থেকে ফের নজরদারি 

কৃষ্ণনগর ও চাপড়া থানায় পুলকার চালকদের নিয়ে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৯
Share:

কৃষ্ণনগরে পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে চালকদের নিয়ে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

পুলকার দুর্ঘটনায় শ্রীরামপুরের সাত বছরের স্কুলছাত্র ঋষভ সিংহের মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসল নদিয়া জেলা পুলিশ। শনিবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় ঋষভের। আর রবিবার থেকেই গোটা জেলা জুড়ে পুলকার নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। আজ, সোমবার স্কুল খোলার পরে দৃশ্যটা কী দাঁড়ায়, তা অবশ্য এখনও দেখার।

Advertisement

এ দিন কৃষ্ণনগর ও চাপড়া থানায় পুলকার চালকদের নিয়ে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ওই দুই থানা এলাকার সমস্ত পুলকার চালকদের গাড়ি নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল। গাড়িগুলি পরীক্ষা করা হয়। জেলার এক পুলিশকর্তার কথায়, “শ্রীরামপুরের ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। এটা নিয়ে আর কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।”

হুগলির ওই ঘটনার পরে গোটা রাজ্য জুড়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, পুলকারের নামে যে সব গাড়ি চলে, সেগুলি সত্যিই কতটা নিরাপদ? কতটা পড়ুয়াদের নিয়ে চলাচলের উপযুক্ত? চালকরা কতটা দক্ষ, কতটা সচেতন? ২০০৮ সালে এই নদিয়া জেলাই এমন দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল। কৃষ্ণনগরের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়ারা পুলকারে ফিরছিল নবদ্বীপ। ঠাকুরতলার কাছে বাঁকের মুখে উল্টো দিক থেকে আসা লরির সঙ্গে ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল তিনটি শিশুর। এর কিছু দিন পরেই ভাতজাংলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিল জনা চারেক পড়ুয়া। তারাও কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়া, শান্তিপুর থেকে আসছিল।

Advertisement

সেই সময়েও পুলকারের নিরাপত্তা নিয়ে একপ্রস্ত হইচই হয়েছিল। নড়ে বসেছিলেন কর্তারা। তার পরে আবার যে-কে-সেই। যে কোনও গাড়িকে পুলকার তকমা দিয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে আসা-যাওয়া চলছে। এমনকি লছিমন বা যন্ত্রচালিত ভ্যান আচ্ছাদনে ঘিরে খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে চলাচল করছে।

এ দিন বিকেলে কৃষ্ণনগর শহরের পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে এই বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ৫০টির মতো পুলকার নিয়ে এসেছিলেন চালকেরা। আরটিও-র প্রতিনিধিরা গাড়িগুলির কাগজপত্র ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে দেখেন। একই ভাবে চাপড়া থানাতেও এমন শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিল প্রায় ২০টি পুলকার। আরটিও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক গাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারযোগ্য (কমার্শিয়াল) না হলেও সেগুলিকে পুলকার হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সেগুলিকে ‘কমার্শিয়াল রেজিস্ট্রেশন’ করাতে বলা হয়েছে। আবার কোনও কোনও গাড়িতে যাত্রী বহনের ক্ষমতার অতিরিক্ত পড়ুয়া তোলা হয়।

এ দিন শিবিরে চালকদের বলে দেওয়া হয়েছে, ছ’মাস অন্তর গাড়ির ‘ফিটনেস’ পরীক্ষা করাতে হবে। সেই সঙ্গে চালকের চোখ পরীক্ষা করানোর কথাও বলা হয়েছে। শহরের ভিতরে ঘণ্টায় সাত কিলোমিটারের বেশি গতিতে পুলকার চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। বাসের ক্ষেত্রে গেটে এক জন কর্মী রাখতে হবে। সমস্ত পুলকারের জানলায় লোহার রড লাগাতেও বলা হয়েছে যাতে পড়ুয়ারা মাথা বার করতে না পারে।

জেলার মোটর ভেহিকেলস ইন্সপেক্টর ইন্দ্রলীল সরকার বলেন, “প্রতিটি থানা এলাকায় এই ধরনের শিবির করা হবে। চালকদের নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে। আমরা স্কুলগুলিকেও নির্দেশিকা পাঠাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement