ফাইল চিত্র।
বাম-কংগ্রেস জোটে আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে জেলার বাম নেতাদের দাবি-দাওয়াকে গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর স্পষ্ট কথা, “জেলা নেতারা কে কি বললেন আমার জানার প্রয়োজন নেই। যা কথা বলার রাজ্যস্তরে বলেছি।সেই মতোই কথা এগোবে।” আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা এখনও জেলা স্তরে পৌঁছয়নি। তবে মুর্শিদাবাদের বাম নেতৃত্বের অনেকেই আসন রফা নিয়ে আগাম দর হেঁকে বসেছেন বলে অভিযোগ। আসন সমঝোতা নিয়ে ইতিমধ্যে বামফ্রন্টের জেলা নেতাদের কাছে তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় নিজস্ব আসন ছাড়তে তারা যে রাজি নয়, তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে বামেরা ভোট টানতে পারেননি। পাঁচ বছর আগের দখল করা সেই বিধানসভা আসনের হিসেব অনেক বদলে গিয়েছে, তা দাবি করা উচিত নয়। আসন ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে এই জড়তা থাকায় জেলায় বাম-কংগ্রেসের যৌথ কর্মসূচি তাই এখনও তেমন সচল হয়নি। ২৭ জানুয়ারি বহরমপুরে জেলা বামফ্রন্ট কৃষক আইন বিরোধী এক সমাবেশের আয়োজন করেছে। সেখান থেকে জেলা শাসকের কার্যালয়েও অভিযান চালানোর কথা। সেই কর্মসূচিতে সিপিআই (এমএল) বামেদের সঙ্গে থাকলেও নাম নেই কংগ্রেসের। আবার অধীরের নেতৃত্বে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত সভা কিংবা মিছিল হয়েছে সেখানেও বামেদের অংশগ্রহণ চোখে পড়েনি। যা নিয়ে দু’দলের নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই জড়তা না কাটলে জোটের লড়াই কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরা।
ইতিমধ্যে বামদলগুলি নিজেদের জেলা কার্যালয়ে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে। সেখানে তাঁরা আগামী বিধানসভায় নিজের নিজের শক্ত ঘাঁটি নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। আরএসপি’র জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক বিভাস চক্রবর্তী তা মেনে নিয়েছেন। তবে জেলায় যৌথ কর্মসূচিতে জড়তা রয়েছে কংগ্রেসেরই দাবি করে বিভাস বলেন, “জেলায় যৌথ কর্মসূচি নিয়ে কংগ্রেসের আগ্রহ কম।” অন্য দিকে, জেলার এক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, “ আমরা বাইশটার মধ্যে ১৮টাতেই জিতব এই আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে। তবু রাজ্যের নিরিখে জোটের স্বার্থে এখানেও বামেদের কিছু আসন ছাড়তে হবে। অতীতে আমাদের জেতা আসন কি তাই বলে বামেদের ছেড়ে দেওয়া যায়?” আরএসপি জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য নেতারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তা মেনে নেব। তবে আগামী বিধানসভা ভোটে বামশক্তিকে মজবুত করে তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্থ করতে যা প্রয়োজন তাই করতে হবে।”