স্পিকারের সঙ্গে তাহের। নিজস্ব চিত্র
সুস্থ হওয়ার দিকে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ছ'মাস ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি এখন অনেকটাই ‘ফিট’। পরিবার সূত্রেই খবর, গত মঙ্গলবার তিনি দিল্লিতে সংসদে গিয়ে দেখা করেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে। তাহের জানান, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। বুধবার মোবাইলে তাহের বলেন, ‘‘এলাকার সার্বিক উন্নয়ন, আমার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ তিন নভেম্বর রাতে তিনি যে নওদার বাড়িতে ফিরবেন, সে কথাও তিনি জানিয়েছেন। তাহের বলেন, ‘‘সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে চাই। সেখানে যাতে ডাকা হয় সে বিষয়েও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
লোকসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে তাহেরের এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তাহের অসুস্থ বলে সামনের বছর লোকসভা ভোটে তাঁর কেন্দ্র মুর্শিদাবাদে তিনি ফের দাঁড়াবেন কি না, সে প্রশ্নও উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল। সেই প্রশ্নের জবাব দিতেই তাহেরের এই উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লিতে আন্দোলনের সময় রাজঘাট ও যন্তরমন্তরেও গিয়েছিলেন। যা থেকে এই বার্তাই পরিষ্কার হচ্ছে যে, তাহের আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে নিজের কেন্দ্রেই দাঁড়াতে আগ্রহী।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নায়ু ও ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে দীর্ঘ দিন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাস দেড়েক ধরে তিনি দিল্লির আবাসনে রয়েছেন। নিয়মিত ফিজিয়োথেরাপি চলছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলের খবর। তাঁর ভাগ্নে নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সফিউজ্জামান শেখ বলেন, ‘‘মামা অনেকটা সুস্থ। তিনি বাড়ি ফিরছেন।’’ তাঁর বাড়ি ফেরার খবরে খুশি তাহের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফিরোজ শেখ বলেন, ‘‘আমাদের নেতা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন এটাই আমাদের কাছে খুব খুশির খবর।’’ তাহেরের সুস্থতা প্রসঙ্গে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটের জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘উনি সুস্থ হয়ে উঠছেন, ভাল লাগছে। চাইব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠবেন।’’
গত ১৯ এপ্রিল নিজের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওই রাতেই তাঁকে ভর্তি করানো হয় মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এক মাসের বেশি সময় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দেন তিনি। ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এখনও তিনি চলাফেরা করছেন হুইল চেয়ারে করেই।