রিয়াজউদ্দিন রাজু। শুক্রবার গেদেতে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
বাড়ি থেকে স্পষ্ট গুলির শব্দ শুনতে পেলাম। পর পর।
ক’দিন ধরে সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে ছাত্রেরা। ঢাকা উত্তাল। তার ঢেউ আছড়ে পড়ছে দেশের অন্যত্র। আমাদের কুষ্টিয়া শহরেও ছাত্ররা রাস্তা নেমেছে। বিশেষ করে সাদ্দাম বাজারের কাছে তারা জড়ো হচ্ছে। পুলিশ তাদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা হটার পাত্র নয়।
সেই জমায়েতের উপরেই বৃহস্পতিবার গুলি চলে। আমার বাড়ি থেকে সাদ্দামবাজার খুব বেশি হলে আধ কিলোমিটার। লোকের মুখে শুনলাম তিন জন গুলিতে মারা গিয়েছে। টিভি চ্যানেলের খবর দেখে নিশ্চিত হলাম। এতগুলো তরতাজা প্রাণ চলে গেল! মেনে নিতে পারছি না। আহতের সংখ্যা আমার জানা নেই। জানার সুযোগও ছিল না। কারণ গোটা শহর ঘরবন্দি।
আমার একটা গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান আছে। বাজারের ভিতরে রাস্তার ধারে নীচের তলায় দোকান। উপরে পরিবার নিয়ে বসবাস করি। আমি দোকান খুলিনি। সাত বছরের ছেলেটা অসুস্থ। তার ওষুধের শুক্রবার ভারতে আসতেই হত। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। বাস চলাচল বন্ধ। খুব ভোরে একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে গেদে পর্যন্ত এলাম। কাল ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। জানি না, তার মধ্যে আর কী কী ঘটবে।