নির্দোষ প্রমাণের পর নবকুমার বিশ্বাস ও তাঁর মা সোনাবালা বিশ্বাস। মঙ্গলবার রানাঘাট আদালতে। ছবি: সুদেব দাস।
সতেরো বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা। ২০০৭ থেকে ২০২৪। পণের দাবিতে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় শেষ পর্যন্ত নির্দোষ প্রমাণিত হলেন স্বামী ও শাশুড়ি।
মঙ্গলবার রানাঘাট ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্ত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি অভিযুক্তদের এ দিন নির্দোষ বলে জানিয়ে দেন বিচারক। দীর্ঘ এই বিচার প্রক্রিয়ায় মোট সাতবার বিচারক বদল হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে এদিন নির্দোষ প্রমাণের পর চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না ৭৭ বছরের বৃদ্ধা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা তপতী মণ্ডলের সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় নদিয়ার হাঁসখালির বাসিন্দা নবকুমার বিশ্বাসের। বিয়ের ছয় বছর পর ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আত্মঘাতী হন তপতী। মৃতার বাবা শ্যামপদ মণ্ডল মেয়ের উপর শারীরিক নিগ্রহ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন জামাই নবকুমার ও মেয়ের শাশুড়ি সোনাবালা বিশ্বাসের নামে। শুরু হয় মামলা। ওই বছরই ডিসেম্বরে মামলার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে মামলায় সাক্ষ্যদান প্রক্রিয়া শুরু হয়। মামলাকারীর পক্ষে হয়ে আদালতে ১৮ জনের সাক্ষ্য দিতেই পেরিয়ে যায় দশ দশটা বছর। ২০১৯ সালে শেষ হয় সাক্ষ্যদান পর্ব। কিন্তু একাধিকবার বিচারক বদলির কারণে মামলার রায়দান অসম্পূর্ণই থেকে যায়। কী ছিল অভিযোগ পত্রে? সূত্রের খবর, মৃতার বাবা অভিযোগ পত্রে লিখেছিলেন, ‘সন্তান না হওয়ার কারণে জামাই ও শাশুড়ি মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ওদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে’। আইনজীবীদের একাংশের মতে, অভিযোগ পত্রে এটা স্পষ্ট হয় যে, পণের দাবিতে মহিলাকে নির্যাতন করা হয়নি।