ঘাতক অটো (বাঁ দিকে) জখম বাপি পাল (ডান দিকে)। রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম বলছে অটোতে চালক-সহ সর্বোচ্চ চার জন যাত্রী থাকার কথা। বাস্তবে আট জন বা তার বেশি যাত্রী নিয়ে চলছে অটো। তারই মাসুল গুনলেন বাপি পাল নামে ব্যক্তি। শনিবার রানাঘাট শহরে এক অটো চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে অটোর হাতল ঢুকে যায় পথচারী বাপির পেটে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে প্রথমে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল ও পরে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অটো ও চালককে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে গাংনাপুর থানার আঁইশমালি থেকে যাত্রী নিয়ে শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আইডাব্লু গেটের কাছে অটো স্ট্যান্ডে ফিরছিল একটি অটো। অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তায় যানজট থাকা সত্ত্বেও গতি বাড়িয়ে ছুটছিল ওই অটোটি। আচমকা পথচারী বাপির পেটে অটোর ডান দিকের হাতল ঢুকে যায়।
জানা গিয়েছে, রানাঘাটের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিলপাড়ার বাসিন্দা বাপি পাল পেশায় রান্নার গ্যাস উনুন মেরামতের কাজ করেন। সকালে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। জখম বাপি পাল বলেন, ‘‘রথতলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেপরোয়া ওই অটো ভিড়ের মধ্যে দিয়ে যেতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রানাঘাট শহরে যানজট ও বেপরোয়া ভাবে অটো, টোটো, অবৈধ যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অথচ পুরসভা, পুলিশ-প্রশাসনের বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই। প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জিত দাস বলেন, ‘‘যে ভাবে অটোর ওই স্টিলের হাতল পথচারীর পেটে ঢুকে গিয়েছে, তা দেখে শিউরে উঠেছি।’’
আর কত দুর্ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন? এই প্রশ্নই তুলছেন শহরের মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "শহরে যানজট এবং বেপরোয়া টোটো, অটো চলাচলের বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। এই ব্যাপারে আমরা কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছি। দুর্ঘটনার বিষয়টি নজরে আসতেই আমরা বৈঠকেও বসেছি।"
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিক দিলীপকুমার মাইতি বলেন, "এই দিনের দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। পুলিশ ও আমারা প্রতিনিয়ত অটোতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছি। তার পরেও অটোচালকেরা ব্যবসায়িক স্বার্থে অতিরিক্ত যাত্রী তুলছেন।’’