এএফপি-র তোলা প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসক তাঁকে লিখিত ভাবে করোনা পরীক্ষা করাতে বলেছেন। কিন্তু গত পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় হত্যে দিয়েও লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠাতে পারেননি চাকদহ পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক মহিলা!
বার-বার হাসপাতালে গেলেও চিকিৎসকেরা তাঁকে কোয়রান্টিনে থাকার কথা বলেননি বলে অভিযোগ। ফলে, কোভিড-সাসপেক্ট হয়েও তিনি বাড়িতেই রয়েছেন, বাইরেও বেরোচ্ছেন।
যেখানে জেলায় প্রতিদিন হুহু করে করোনা রোগী বাড়ছে এবং বেশি করে পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এই রকম ঘটনা জেলার করোনা মোকাবিলার পরিকাঠামো নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
গত রবিবার জ্বর ও কাশি নিয়ে ওই মহিলা চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লেখেন, তাঁকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে। ওই মহিলার জামাইয়ের দাবি, ওই দিন হাসপাতাল থেকে দিন দু’য়েক পরে আসতে বলা হয়। সেই মতো অসুস্থ মহিলাকে নিয়ে মঙ্গলবার তাঁরা চাকদহ হাসপাতালে যান।
অভিযোগ, সে দিন বলা হয় পুরসভা থেকে সংশাপত্র আনলে তবেই করোনো পরীক্ষা হবে। আবার পুরসভায় যোগাযোগ করলে বলা হয়, কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গেলে তবেই কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা হবে। কিন্তু চাকদহ হাসপাতাল থেকে রেফার না লিখলে জেএনএমে কেউ পরীক্ষা করবেন কিনা তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না। ফলে জেএনএমে যাননি। বৃহস্পতিবার রাতে মহিলা ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন চাকদহে হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে কিছু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার ফের ওই মহিলাকে নিয়ে বাড়ির লোক চাকদহ হাসপাতালের আউটডোরে যান। তাঁদের অভিযোগ, তখন সেখানকার চিকিৎসক জানান, ওই মহিলার করোনা পরীক্ষার দরকার নেই! কিন্তু ওই হাসপাতালের অন্য চিকিৎসক কোভিড পরীক্ষার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া, মহিলার জ্বর, শুকনো কাশিও কমছে না। তখন তাঁরা হাসপাতালের সুপার সর্বানন্দ মধুর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে করোনা পরীক্ষার বিষয়টা জানানো হয়। তার পরেই সুপার তাঁকে জেএনএমে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এখানেই সমস্যার সমাধান হয়নি। এ দিন ওই মহিলাকে জেএনএমের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, পাঁচ দিন ধরে কেন ওই মহিলার কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা গেল না? কেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়নি?
চাকদহ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সর্বানন্দ মধু বলেন, ‘‘আসলে এই সপ্তাহের কোনও নমুনারই পরীক্ষা এখনও নাইসেডে হয়নি। প্রচুর নমুনা জমে রয়েছে। ফলে অল্প নমুনা পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রাধান্য দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে ওই মহিলার পরীক্ষা করানো যায়নি। আমার কাছে ওই মহিলা এসেছিলেন। আমি তাঁকে জেএনএমে যেতে বলেছি।’’