—প্রতীকী ছবি।
রাস্তায় পড়ে ছিল ছেলের কাটা আঙুল। জোড়া লাগাতে সেই কাটা আঙুল তুলে হাসপাতালে ছুটলেন মা। শুক্রবার রাতে নদিয়ার কল্যাণীতে ঘটনাটি ঘটেছে। আঙুল জোড়ার সেই অস্ত্রোপচারও ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তবে সেই আঙুল কাজ করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় নাপিত মিহির বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর সেলুনে কাজ করছিলেন। তখনই আরমান তরফদার নামে স্থানীয় এক যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হন। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে মিহিরের বাঁ হাতের মধ্যমা আঙুলটি কেটে মাটিতে পড়ে যায়। তাঁর চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয়রা। অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। এর পর আহত মিহিরকে রক্তাক্ত অবস্থায় কল্যাণী জহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অন্য দিকে, ছেলের আঙুল কাটা পড়েছে শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মিহিরের মা। ছেলের কাটা আঙুল মাটিতে দেখতে পান তিনি। এর পর সেই কাটা আঙুল মাটি থেকে তুলে শাড়ির আঁচলে বেঁধে হাসপাতালে পৌঁছন। ছেলের আঙুল জুড়ে দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের কাছে কাকুতিমিনতি করেন তিনি। এর পর মিহিরের আঙুল জুড়তে অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া শুরু করেন চিকিৎসকরা। সেই অস্ত্রোপচার ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তবে মিহিরের আঙুল কাজ করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কাটা আঙুল অস্ত্রোপচার করে জোড়া লাগানোর জন্য আঙুলটিকে ভিজে কাপড়ে মুড়ে নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মিহিরের আঙুল ইতিমধ্যেই জোড়া লাগানো হয়েছে। তবে তা কাজ করবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে মিহিরের মা বলেন, “আমার ছেলে কাজ করছিল। সেই সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক জন ওকে মারধর করে। ছেলের হাতের আঙুল কেটে যায়। কী করব বুঝতে না পেরে আমি ওই আঙুল কুড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় আরমান নামে অভিযুক্ত ওই যুবককে ধরে গণধোলাই দেন স্থানীয়রা। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কোনও পূর্ব শত্রুতার জেরে, না কি অন্য কোনও কারণে মিহিরের উপরে হামলা চালানো হল, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।