বাড়ির লোকেদের সাথে বাড়ি ফিরছেন পারভান। ২ ডিসেম্বর, ২০২৩। ছবি গৌতম প্রামাণিক।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। মানসিক রোগী থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উদ্যোগী হয়ে তাঁকে ঘরে ফেরাল।
মঙ্গলবার ওই ব্যক্তিকে বহরমপুরে মানসিক হাসপাতালে এসে নিয়ে যান তাঁর ভাই ও ভাইপো। পারভান নামের বছর পঞ্চাশের ওই প্রৌঢ়কে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবারই বহরমপুর থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তাঁর ভাই রঙ্গিলাল ও ভাইপো মোতিলাল। তাঁরা জানিয়েছেন, ২৫ বছর পরে পারভানকে কাছে পেয়ে তাঁরা দারুণ খুশি। বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল ও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তাদেরও তাঁরা ধন্যবাদ জানিয়ে গিয়েছেন।
বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে পারভানের চিকিৎসা করেছেন চিকিৎসক প্রসেনজিৎ সুরাই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘ওঁকে চিকিৎসা করে সুস্থ করেছি। ওর বাড়ির খোঁজ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। শেষ পর্যন্ত পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারায় ভাল লাগছে।’’ বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে সুস্থদের পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আধিকারিক স্বরূপ রায় বলেন, ‘‘২৫ বছর আগে পারভান বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তবে ২০১২ সাল থেকে তিনি বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে ছিলেন। মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছেন।’’ রঙ্গিলাল এ দিন বলেন, ‘‘এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও হাসপাতালের জন্যই দাদাকে ফিরে পেলাম। খুব ভাল লাগছে এতদিন পর ওকেকাছে পেয়ে।’’
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পারভানের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার রসুলপুরে। ২৫ বছর আগে বাড়ি থেকে বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন তিনি। তারপরে সেখান থেকে বাড়ি ফেরার জন্য ভুল ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন। যার জেরে তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকেন। ২০১২ সালে মালদহের হবিবপুরে ছেলেধরা সন্দেহে কয়েক জন তাঁকে মারধর করছিল। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। তখন থেকেই তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে।
ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিন চারেক আগে পারভান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তাদের জানান, যে তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে। তারপর সেখানকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার বহরমপুরে আসেন পারভানের ভাই এবং ভাইপো। এ দিন বিকেলে হাসপাতাল এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে তাঁদের হাতে পারভানকে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা ট্রেনে করে উত্তরপ্রদেশ রওনা দিয়েছেন বলেজানা গিয়েছে।