ফোনে খেলার সময়েই গুলি, খুন 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, বন্দুক নিয়ে নিছক মজা করতে গিয়েই কোনও ভাবে গুলি চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

ঘটনাস্থলে পড়ে রক্তমাখা জামা। নিজস্ব চিত্র

বন্ধুরা মিলে এক জায়গায় জড়ো হয়ে মোবাইলে ‘গেম’ খেলছিলেন। গল্পগুজবও চলছিল। এমন সময় আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়লেন তাঁদেরই এক জন সাফিউর রহমান ওরফে টিঙ্কু (৪৬)। তাঁর পাঁজর ফুটো করে ঢুকে গিয়েছে বন্দুকের গুলি। বন্ধুদের মধ্যে কয়েক জন তাঁকে কৃষ্ণনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বুধবার রাতের এই ঘটনার রহস্যের সমাধান পুলিশ হাতড়াচ্ছে।

Advertisement

মোবাইলে ‘গেম’ চলাকালীন কে, কেন গুলি চালালেন, বন্দুক এল কোথা থেকে—এ সব কোনও প্রশ্নেরই জবাব মেলেনি। তার উপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যেকেই টিঙ্কু মারা যাওয়ার পরে পালিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনু মল্লিক, খাইরুল শেখ, কদম খাঁকে পুলিশ আটক করেছে। কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত সরিফুর ইসলাম মণ্ডল, কালু মোল্লা এখনও পালাতক। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, বন্দুক নিয়ে নিছক মজা করতে গিয়েই কোনও ভাবে গুলি চলেছে। কিন্তু সেই অনুমান যে নিশ্চিত, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। নাকাশিপাড়ার সুখসাগর এলাকার মুণ্ডমালা পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন নিহত টিঙ্কু। কেবলের ব্যাবসা করতেন তিনি। গত পঞ্চায়েতের ভোটে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিজেপির দিকে ঘেঁষছিলেন বলে পরিবারের দাবি। তাঁর বন্ধু সরিফুর ইসলাম মণ্ডল আবার তৃণমূলের পাটপুকুর এলাকার পঞ্চায়েতের সদস্য। অন্য বন্ধুদের মধ্যে কালু মোল্লা ও সদা মল্লিক তৃণমূলের সমর্থক হিসেবেই পরিচিত।

টিঙ্কুর স্ত্রী পারভিনা শেখের কথায়, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় মাংস কিনে এনে রাঁধতে বলেছিল। তার পরেই ওর বন্ধু সরিফুর ইসলাম মণ্ডল ওকে ফোন করে ডাকে। ও চলে যায়। রাতের দিকে সাফিউর আবার রান্না করা মাংস নিতে আসে। আমি তখন ওকে যেতে বারণ করি। কিন্তু ও চলে যায়। গভীর রাতে পুলিশ এসে গুলি লাগার খবর দেয়।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরে সরিফুরের সঙ্গে ওর ঝামেলা চলছিল। শুনছিলাম আমার স্বামী বিজেপি করছে। আমি বারণ করেছে।’’

Advertisement

স্থানীয় দোগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য তথা ওই বুথের সদস্য আব্দুল লথিব মোল্লা বলেন, ‘‘এলাকায় রাজনৈতিক হিংসা নেই। এই খুনের পিছনে ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে।’’ তবে বিজেপির স্থানীয় নেতা ও নদিয়া উত্তর জেলার যুব মোর্চার সভাপতি প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের ভোটে পর থেকে উনি আমাদের সঙ্গে ওঠা বসা শুরু করেন। সেই কারণে ওঁকে খুন করে হতে পারে বলে মনে হচ্ছে আমাদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement