—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শান্তিপুরের সূত্রাগড়ের জগদ্ধাত্রী পুজো জেলার গর্ব। এই পুজোকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে একাধিক ঐতিহ্যবাহী পুজো, তেমনই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন বারোয়ারি পুজো কমিটি আধুনিক থিমের ডালি নিয়েও হাজির হয়েছে। এবারেও সূত্রাগড়ের বিভিন্ন জগদ্ধাত্রী পুজোয় হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য তুলে ধরা হচ্ছে। সেখানে ছৌ নাচ, পুতুলনাচ যেমন থাকছে, রয়েছে শান্তিপুরের তাঁতশিল্প থেকে নবান্ন উৎসবও।
এই বছরে জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপে বাংলার হারিয়ে যেতে বসা প্রাচীন সংস্কৃতি তুলে ধরছে সূত্রাগড়ের বিভিন্ন পুজো কমিটি। যেমন, শান্তিপুরের প্রায় তিনশো বছরের পুরনো সময়ের পুজো কদবেলতলা বারোয়ারি। ওই পুজোয় উঠে আসছে ছৌনাচ থেকে শুরু করে পুতুলনাচ, এমনকি শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। ওই পুজো কমিটির মণ্ডপের থিমে থাকছে তাঁত, চরকা, তাঁতের শাড়িও। থাকবে ছৌনাচের মুখোশ। থাকবেন পুতুলনাচের শিল্পীরাও, যাঁরা পুতুলনাচ পরিবেশন করবেন মণ্ডপে। উদ্যোক্তাদের কথায়, ‘‘আমাদের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্যই এই উদ্যোগ।’’ ওই পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় থাকছে আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যান্ড।
অন্য দিকে, শান্তিপুরের কৃষ্ণকালীতলা বারোয়ারি প্রত্যেক বারের মতো এবারও ভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনার থিম হাজির করছে পুজো মণ্ডপে। তাদের এবারের টিম রাঙ্গামাটির নব অন্ন। ওই পুজো মণ্ডপ সাজানো থাকছে ধানের ছড়া, ঝুড়ি, মাটির সরা ইত্যাদি জিনিস দিয়ে। থাকবে লণ্ঠনও। মণ্ডপ ঝুমুর নৃত্য পরিবেশন করবেন শিল্পীরা।
আবার, চুনুরি পাড়া নিউ তরুণ সঙ্ঘের মণ্ডপ থাকছে ধানচাষ থেকে শুরু করে নবান্ন পর্যন্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া। মণ্ডপের থিমে ধান চাষ দেখানো হবে বিভিন্ন মডেলের সাহায্যে। পাশাপাশি, সেখানে ধান ঝাড়াই প্রক্রিয়া, চাল থেকে পিঠেপুলি, পায়েস তৈরি এবং নবান্ন দেবীর কাছে তা নিবেদন— সবই থাকছে। মণ্ডপেই তা তৈরি হবে সকলের সামনে। মাটির বাড়ি, ঢেঁকিও থাকছে পুজো মণ্ডপ। জীবন্ত মডেলের মাধ্যমে এই সমস্ত জিনিসই ফুটিয়ে তোলা হবে। সব মিলিয়ে, কোথাও যেমন জীবন্ত মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে, কোথাও আবার ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। যা দিয়ে আধুনিকতার মোড়কে হারানো সংস্কৃতি তুলে ধরছে শান্তিপুরের জগদ্ধাত্রী পুজো।