দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। নিজস্ব চিত্র।
বাস উল্টে মৃত্যু হল এক শিশুর। জখম হয়েছেন ২৩ জন। বুধবার দুপুরে শান্তিপুরের ফুলিয়াপাড়া এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম অনুষ্কা বসাক (৬)। বাড়ি শান্তিপুরের গোবিন্দপুর আড়পাড়ায়। জখমদের মধ্যে ১৩ জন ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চিকিৎসাধীন। বাকিরা রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের ভর্তি। সেখানে চিকিৎসাধীন অনুষ্কার মা কল্পনা বসাকও। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বেহাল জাতীয় সড়কের দরুন ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রানাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরে দ্রুত গতিতে বেসরকারি ওই বাসটি আসছিল। ঘটনাস্থলে জাতীয় সড়কের অবস্থা বেহাল। সামনে বড় গর্ত পড়লে চালক ব্রেক কষেন। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর উল্টে যায় বাসটি। তা দেখে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে আসে পুলিশও। বাসের ভিতর থেকে একে একে আহতদের উদ্ধার করে ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ১০ জনকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এ দিকে, মাটি কাটা মেশিন দিয়ে তোলার পর বাসের নীচে অনুষ্কা বসাককে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে ফুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার খবর ছড়িয়ে যেতে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু-সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা নবকুমার বলেন, “যে এলাকায় বাসটি উল্টেছে সেই এলাকাতে রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। আমরা চাই বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ভাবনাচিন্তা করুন।” অন্য দিকে, ফুলিয়ার বাসিন্দা অন্তত ঘোষ বলছেন, “রাস্তার হাল খারাপ। বাস চালকদেরও উচিত আরও সাবধানে গাড়ি চালানো।”
রানাঘাট মহকুমাশাসক রানা কর্মকার বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত জাতীয় সড়ক কর্তৃক্ষকে রাস্তা সংস্কারের জন্য বলছি। আবারও আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। আশা করছি তাঁরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে দেবেন।” ন্যাশানাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কৃষ্ণনগর ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিটের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর সৌতম মণ্ডল বলছেন, “ঠিক কী কারণে ওখানে দুর্ঘটনাটি ঘটল, রাস্তা কী অবস্থায় আছে আমার কিছুই জানা নেই। খোঁজ নেওয়ার পর যা বলার বলব।”