—নিজস্ব চিত্র।
একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার চূড়ান্ত সালিশি চলছিল মুর্শিদাবাদের কান্দি আদালত চত্বরের এক আইনজীবীর কক্ষে। স্বামী ও স্ত্রীর পক্ষের বাড়ির লোকজন উপস্থিত ছিল সেই সালিশি সভায়। সহমতের ভিত্তিতে বিবাহ বিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া চলাকালীন হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দু’পক্ষের গন্ডগোলে কিছু ক্ষণের জন্য রণক্ষেত্র চেহারা নেয় কান্দি আদালত চত্বর। বাঁশ ও লোহার রড নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার অভিযোগ তোলে। মুহুর্মুহু ছোড়া ইটে মাথা ফাটে তিন জনের। সব মিলিয়ে আহত হন মোট ন’জন। আহতদের উদ্ধার করে কান্দি সুপার স্পেশালটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার হিজল নতুন গ্রামের মোকলেসুর রহমানের সঙ্গে প্রায় ন’বছর আগে ওই একই থানা এলাকার ভবানীপুরের বাসিন্দা পারসিদা বিবির সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। ওই দম্পতির একটি সন্তানও রয়েছে। দীর্ঘ দু’বছর ধরে স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহের জেরে টানাপড়েন তৈরি হয়। শুরু হয় বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া। আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এড়িয়ে স্থানীয় এক এক আইনজীবীর মধ্যস্থতায় বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় দুই পক্ষ। ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার এককালীন খরপোশের বিনিময়ে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো শুক্রবার দুপুরে আইনজীবীর কক্ষে আইনি প্রক্রিয়া চলছিল। সেই সময় দু’পক্ষের বাদানুবাদ শুরু হয়। অভিযোগ, মেয়ে পক্ষের আত্মীয়েরা কাছে থাকা একটি লোহার রড নিয়ে ছেলে পক্ষের আত্মীয়দের উপর আক্রমণ করেন। ছোড়া ইটে জখম হয় দু’পক্ষের মোট ন’জন। মাথা ফাটে তিন ব্যক্তির। আহতদের উদ্ধার করে কান্দি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কান্দি থানার পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মোকলেসুর রহমানের দাবি, ‘‘স্ত্রীর সঙ্গে পাড়ার একটি অন্য ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। তাই দীর্ঘ দিন ধরে আমি ডিভোর্স চাইছি। ওরা পাঁচ লাখ টাকা চেয়েছিল। দু’লাখ পঁচিশ হাজার টাকায় মীমাংসা হয়। টাকা দেওয়ার পরেও আমাদের মারধর করা শুরু করে।’’ সব অভিযোগ অস্বীকার করে মোকলেসুরের স্ত্রী পারসিদা বিবি বলেন, ‘‘সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। আমাকে উদ্দেশ্য করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নোংরা কটুক্তি করার প্রতিবাদ করেছিল বাড়ির লোকেরা। পাল্টা ওরা ইট ছোড়া শুরু করে।’’