প্রতীকী ছবি।
ভোটের দিন ঘোষণার পর একটা দিন না কাটতেই নদিয়ায় কারামন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপিতে যোগ দিলেন পাঁচ পঞ্চায়েত সদস্য। এর মধ্যে চার জন তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত। মাস দুয়েক আগে তাঁরা দল ছাড়েন। আগেই তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের।
গত ডিসেম্বরেই তৃণমূল ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের সাত তৃণমূল সদস্য। শনিবার এঁদের মধ্যে চার জন যোগ দিলেন বিজেপিতে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এক নির্দল সদস্যও। মোট ২৭ আসনবিশিষ্ট ভাতজাংলা পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে ১৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি আটটি, সিপিএম দু’টি এবং তিনটি আসনে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন। আগেই এক নির্দল সদস্য বিজেপিতে গিয়েছিলেন। এ দিনের পর এই পঞ্চায়েতে বিজেপির সদস্য দাঁড়াল ১৪ এবং তারাই এখানে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বলে দাবি বিজেপির।
দলত্যাগীদের মধ্যে কৌশিক ঘোষ দাবি করেন, “পঞ্চায়েত প্রধানের দুর্নীতির অভিযোগ দলকে জানানোর পরেও দল ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে আমাদেরই কোণঠাসা করে দেয়। তাই আগেই দল ছেড়েছিলাম। এ দিন বিজেপিতে যোগ দিলাম। ভাতজাংলা পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা হবে।”
শনিবার কলকাতায় রাজ্য বিজেপির দফতরে এঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল ও রাজ্য নেতৃত্বের কেউ কেউ। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, অনেক আগেই এই সদস্যদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাঁরা বিজেপিতে চলে যাওয়ায় ওই এলাকায় তৃণমূল ধাক্কা খেল, তা বলাই বাহুল্য। কারণ এই ভাতজাংলা পঞ্চায়েত শুধু যে জেলাসদর কৃষ্ণনগর শহরের লাগোয়া তা-ই নয়, সেটি কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত যার বিধায়ক রাজ্যের কারামন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস। এ দিন কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভারই ধুবুলিয়া ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম সদস্য শ্যামল ঘোষও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ২০১৫ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। আবার ধুবুলিয়া ২ অঞ্চলের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতিও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অনেক আগেই তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া কনভেনর সন্দীপ মজুমদার বলেন, “যে বিধানসভা এলাকায় রাজ্যের মন্ত্রী নির্বাচিত, সেখান থেকে নেতাকর্মীরাই দলের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দল ছাড়ছেন। তাহলে সাধারণ মানুষ কী ভাবছেন, বোঝাই যাচ্ছে।”
কারামন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “ভাতজাংলার এই সদস্যেরা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। ওরা বিজেপিতেই ছিল। আগেই দল থেকে ওদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।”