প্রতীকী ছবি।
টলটলি ঘাটের দখল নিয়ে বিবাদ নতুন নয়। বোমাবাজির ঘটনাও প্রায় গা সওয়া হয়ে গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। দু’পক্ষের সেই ‘যুদ্ধে’র সলতে পাকাতে গিয়েই বোমায় ছিন্নভিন্ন হল তিন জন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, ওই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ৬। তবে বাকিদের দেহ মেলেনি।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (লালবাগ) তন্ময় সরকার বলেন, ‘‘তিন জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বোমা বাঁধতে গিয়েই ওই দুর্ঘটনা। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। তবে ওই ঘটনায় আরও কয়েক জন আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।’’
জলঙ্গির ঘোষপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে টলটলি ঘাটের দখল নিয়ে বাম আমলেও সঙ্ঘাত কম হয়নি। সে সময়ে কংগ্রেস ও সিপিএমের প্রায়ই গন্ডগোল বাধত ঘাটের ঠিকাদারির দখল নিয়ে। রাজ্যে পালাবদলের পরে সেই ধারা বজায় রেখেছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী, এমনই দাবি বিরোধীদের।
পুলিশ জানায়, গত কয়েক দিন ধরেই ওই ঘাট নিয়ে মৃদু সংঘর্ষ চলছিল। এ দিন তারই প্রস্তুতিতে একটি গোষ্ঠীর জনা দশেক যুবক টলটলি মাঠে বোমা বাঁধছিল। হঠাৎই তুমুল বিস্ফোরণের শব্দ।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, আহত কয়েক জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পালাতে দেখেছেন তাঁরা। পরে কয়েকটি মৃতদেহও সরিয়ে নেওয়া হয় বলে তাঁদের দাবি। তবে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার করেছে। মৃতদের মধ্যে মিন্টু মণ্ডল (১৭) ও নান্টু মণ্ডলের (২০) পরিচয় জানা গিয়েছে। তারা টলটলির বাসিন্দা। মাঝবয়সী অন্য জনের পরিচয় জানা যায়নি।
মৃতেরা সকলেই যে তৃণমূলের সমর্থক তা মানতে চাননি জলঙ্গি ব্লক তৃণমূল রাকিবুল। তিনি বলেন, ‘‘এটা সমাজবিরোধীদের কাজ। দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তবে দলের স্থানীয় বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা দলেরই কর্মী। তবে কী করে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানা যায়নি। এলাকা শান্তই ছিল, এমন কাণ্ড হওয়ার কথা নয়। আমরা দলীয় ভাবেও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।’’
যা শুনে জলঙ্গির ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হলেই বোঝা যাবে কেন এমন কাণ্ড হল। বোমা বাঁধতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা এবং এখানে বোমার লড়াই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর নিত্য ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রায় একই সুরে বলছেন, ‘‘তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এই বোমার লড়াই লেগেই থাকত। সন্ধের পরে ঘাটের দিকে বেরোনোই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল