গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
জলপাইগুড়ি-দার্জিলিঙের পর এ বার মালদহ এবং মুর্শিদাবাদকেও ভেঙে নতুন জেলা করার পরিকল্পনা করছে নবান্ন। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী দু’টি জেলাকেই উত্তর এবং দক্ষিণে ভাঙা হবে।
তবে, শুরুতেই জেলা প্রশাসনে বিভাজন না ঘটিয়ে নতুন পুলিশ জেলার মর্যাদা দেওয়া হবে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। পুলিশ জেলা হিসাবে কয়েক বছর থাকার পর ধীরে ধীরে আলাদা জেলার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। তার পরেই আলাদা জেলা ঘোষণা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর, এ বছরের শেষেই নবান্ন থেকে আলাদা পুলিশ জেলার ঘোষণা হতে পারে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার উত্তর অংশকে আলাদা করে নতুন পুলিশ জেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জঙ্গিপুরকে নতুন পুলিশ জেলার সদর হিসাবে ভাবা হচ্ছে। এ নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে নবান্নে বেশ কয়েক দফা বৈঠকও হয়ে গিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের।
মুর্শিদাবাদে পাঁচটি মহকুমা— জঙ্গিপুর, সদর, কান্দি, লালবাগ এবং ডোমকল। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী জঙ্গিপুর এবং লালবাগ মহকুমার অবস্থান জেলার উত্তর ভাগে। বাকি তিনটি মহকুমাই জেলার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে জঙ্গিপুর এবং লালবাগ মহকুমাকে নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা গঠন করা হবে। বাকি তিনটি মহকুমা থাকবে বর্তমান মুর্শিদাবাদেই। জঙ্গিপুর এবং লালবাগ মিলিয়ে ১২টি ব্লক। কান্দি, সদর এবং ডোমকল মিলিয়ে ১৪টি ব্লক। মোট আয়তন ৫ হাজার ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘বর্তমান জেলা সদর বহরমপুর থেকে সুতির দূরত্ব অনেক। ফলে জঙ্গিপুরকে কেন্দ্র করে নয়া জেলা হলে পুলিশ বা প্রশাসন সকলেরই সুবিধা।”
আরও পড়ুন: ‘আর কারও কাছে যাওয়ার দরকার নেই’, অধ্যাপকসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ‘অর্থ’ বুঝতে চাইলেন রাজ্যপাল
ঠিক একই পদ্ধতিতে মালদহ জেলাকেও উত্তর-দক্ষিণে আড়াআড়ি ভাঙার পরিকল্পনা রাজ্য প্রশাসনের। ৩ হাজার ৭৩৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই জেলায় দু’টি মহকুমা— মালদহ সদর এবং চাঁচল। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী মহকুমা ভিত্তিতেই ভাগ করা হবে জেলা। মালদহ সদর মহকুমায় ৯টি ব্লক। অন্য দিকে চাঁচল মহকুমার মধ্যে রয়েছে ৬টি ব্লক— হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২, চাঁচল ১ ও ২ এবং রতুয়া ১ ও ২।
নবান্নের এক শীর্ষ আমলা বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের সভাধিপতি থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর ইঙ্গিত, দু’টি ব্লক নিয়ে জেলা পরিষদের সদস্যদের আপত্তি রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, মানিকচক ব্লক যেটি বর্তমানে সদর মহকুমায় রয়েছে সেটি চাঁচলের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওই আমলা জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের সদস্যদের আপত্তি সেখানেই। কারণ, মানিকচক থেকে চাঁচলের দূরত্ব মালদহ সদর থেকে অনেক বেশি। ফলে মানিকচককে চাঁচলের অন্তর্ভুক্ত করলে সেখানকার বাসিন্দাদের সমস্যা হবে। সে রকম বামনগোলা ব্লক নিয়েও চূড়ান্ত হয়নি কোন জেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে সক্রিয় ডি-কোম্পানির লটারি, পাকিস্তান থেকে আসা ফোনে প্রতারিত অনেকে
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে নতুন পুলিশ জেলাগুলিতে পুলিশ সুপার নিয়োগ করা হবে। তার পর থানাগুলির এলাকা পুনর্গঠন করা হবে। তবে পুলিশ জেলা তৈরি করা হলেও জেলাশাসক এক জনই থাকবেন। আলাদা জেলার পরিকাঠামো তৈরি হলে তবেই নতুন জেলাশাসক নিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে।