‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে কৃষকদের দু’টি প্রকল্পের উপরে বাড়তি জোর দিল রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নব পর্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এ বার কৃষকদের দু’টি প্রকল্পের উপরে বাড়তি জোর দিল রাজ্য সরকার। ‘বাংলা শস্য বিমা যোজনা’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকার সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার আওতায় আরও অন্তত ৯০ হাজার কৃষককে নথিভুক্ত করার কথাও জানানো হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নবান্নের এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।
সরকারের দাবি, ২০১৯ সাল থেকে প্রতিটি মরসুমে কৃষকদের জন্য শস্য বিমার সুবিধা চালু আছে। তাতে প্রিমিয়ামের পুরো অর্থই দেয় রাজ্য। শুধু আলু, আখের মতো অর্থকরী ফসলের ক্ষেত্রে ৩% প্রিমিয়াম দিতে হয় কৃষকদের। রাজ্যের বক্তব্য, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আবাদ শুরুর সময় কম বৃষ্টির দরুন ফসল উৎপাদনে অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছিল। সেই জন্য এই প্রকল্পের আওতায় খরিফ মরসুমে ৫.৮০ লক্ষ কৃষককে ৩৪৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। এর আগে রবি মরসুমে ৯.৪৪ লক্ষ কৃষক ফসলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রকল্পের আওতায় ১৫.২৪ লক্ষ কৃষককে ৭৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে কৃষি দফতরের দাবি।
সেই সঙ্গে রাজ্যের দাবি, ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থায় এ-পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার কৃষক নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে অন্তত ১.৩৮ কোটি কৃষক ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে এই সুবিধা পেয়েছেন। এই খাতে প্রায় ৩৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। চলতি পর্যায়ের দুয়ারে সরকার কর্মসূচির আওতায় এই প্রকল্পেও আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতের মতো গ্রামীণ ভোটের ক্ষেত্রে দু’টি ক্ষেত্রকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সরকার। তার একটি কৃষি এবং অন্যটি গ্রামীণ সড়ক পরিকাঠামো। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই দু’টি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের বার্তা দেওয়া সরকারের কাছে জরুরি। কৃষকদের জন্য এই সব ব্যবস্থা ছাড়াও প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে রাজ্যে।