ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ছাত্রছাত্রীদের ঋণদানের ব্যাপারে তৎপর হওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষকে আগেই অনুরোধ করেছেন। রাজ্য সরকারের তরফে মঙ্গলবার ফের অনুরোধ জানালেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ছাত্রঋণ কার্ড প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক। যোগ দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কও। এই অবস্থায় পড়ুয়ারা যাতে দ্রুত ঋণ পান, সেই জন্য এই কাজের গতি বাড়ানো দরকার। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে এ দিন এক বৈঠকে বসে মুখ্যসচিব আর্জি জানান, ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ যেন ঋণদানের গতি বাড়ান।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কমবেশি ১.৮০ লক্ষ পড়ুয়া ঋণ চেয়ে আবেদন করেছেন। আর প্রায় ৫৫ হাজার আবেদনপত্র ব্যাঙ্কের তরফে ঋণ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২২ হাজার পড়ুয়া ঋণ গ্রহণ করেছেন। প্রশাসন মনে করছে, আবেদনের নিরিখে ঋণ অনুমোদনের হার এখনও কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছয়নি। তাই ব্যাঙ্কগুলিকে এ দিন আবার অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষা দফতরকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে-সব আবেদনকারীর ঠিকঠাক নথিপত্র আছে, তাঁদের আবেদন যেন চলতি মাসের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়। সেগুলি পেয়ে কোনও ব্যাঙ্ক যাতে গড়িমসি না-করে, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলি পড়ুয়াদের যে-ঋণ দিচ্ছে, তাতে গ্যারান্টার থাকছে রাজ্য সরকার নিজেই। ফলে কোনও ব্যাঙ্কেরই কোনও রকম দ্বিধার কারণ নেই বলে অভিজ্ঞ সরকারি কর্তাদের অভিমত।
ঋণের গতি বাড়াতে এর আগে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিও যাতে পড়ুয়াদের ঋণ দিতে তৎপর হয়, সেই ব্যাপারেও বারে বারে সংশ্লিষ্ট দফতরকে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, এ বারেও সেই নির্দেশের ব্যতিক্রম নেই। জোর দেওয়া হয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির উপরেও। সরকারি, বেসরকারি এবং সমবায় ব্যাঙ্কগুলি একযোগে এ কাজ করলে আটকে থাকা আবেদনপত্রের সংখ্যা কমানো যাবে বলে সরকারের আশা।
অতীতে ছাত্রঋণ কার্ডের জন্য পৃথক শিবিরের আয়োজন করেছিল সরকার। চলতি মাসেও তেমনই পৃথক শিবিরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সব পরিকল্পনামাফিক চললে নথি জমা দেওয়ার পদ্ধতি সরল রাখতে কয়েক দিনের মধ্যে সেই শিবির চালু হতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। গতি বাড়লে এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা আবেদনপত্র অনুমোদন পেলে সেই অঙ্ক শীঘ্রই ১০০০ কোটিতে পৌঁছতে পারে বলে সরকারি সূত্রের অনুমান।
এ দিন মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড, আর্টিজ়ান কার্ড, উইভার ক্রেডিট কার্ডের টাকাও ব্যাঙ্কগুলিকে দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে ৬৮ হাজার মৎস্যজীবী কার্ড, ৫৫ হাজার আর্টিজ়ান কার্ড, ১৫ হাজার উইভার কার্ড এবং ৫৫ হাজার ছাত্রঋণ কার্ডের আবেদন বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জমে আছে।