দুয়ারে সরকার পরিষেবা সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তি করতে হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার থেকে দুয়ারে সরকার শিবির শুরু করেছে রাজ্য সরকার। তার আগে অবশ্য যে ২৭টি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছে নবান্ন। গত শনিবার পঞ্চম দুয়ারে সরকার-এর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সমস্ত দফতরের সচিবদের পাশাপশি ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক, বিডিও এবং মহকুমা শাসকরাও। সেই বৈঠকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরিষেবা সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তি করতে হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া দুয়ারে সরকার শিবিরগুলি চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে পরিষেবা পেতে যে সমস্ত আবেদন জমা পড়বে, তার নিষ্পত্তির জন্য সময়সীমা বেঁধে দিল রাজ্য সরকার।
এ বারের শিবির থেকে জমির পাট্টার জন্য আবেদন গ্রহণের পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। জমির পাট্টার জন্য জমা পড়া সমস্ত আবেদনপত্রের অনুসন্ধান এবং যাচাইয়ের কাজ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে পাট্টা পাওয়ার যোগ্য উপভোক্তাদের নামের তালিকাও এই সময়ের মধ্যেই তৈরি করে ফেলতে হবে। কৃষিকাজ এবং বাসস্থান নির্মাণ, উভয়ের জন্যই পাট্টার আবেদন নেওয়া হবে দুয়ারে সরকার শিবিরে।
জমির পাট্টার আবেদনের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়েও আবেদন জমা নেওয়া হবে এ বারের দুয়ারের সরকার-এর শিবিরে। বৈঠকে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়েও বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা পেতে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক, থাকতে হবে আধার কার্ডও। প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আধার কার্ড থাকা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
তবে রাজ্য সরকারের এই দুয়ারে সরকার শিবিরের পরিকল্পনাকে পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে মিলিয়েই দেখা হচ্ছে। কারণ আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট। রাজ্যের ২২টি জেলাতে হবে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে ২৭টি জনমুখী পরিষেবা গ্রামীণ জনতার কাছে পৌঁছে দিয়েই তৃণমূল সরকার পঞ্চায়েত ভোটে যেতে চাইছে। কারণ, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে প্রথম বার রাজ্যে আয়োজিত হয়েছিল দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। নবান্নের মসনদে তৃতীয় বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তনে বড় ভূমিকা ছিল এই কর্মসূচির। তাই মনে করা হচ্ছে, দুয়ারে সরকার শিবির মারফত আবেদনপত্র পেয়ে তা দ্রুত নিষ্পত্তির কথা বলে কার্যত পঞ্চায়েত ভোটের পথ প্রশস্ত করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল।