মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে তৃতীয় আরও এক জনের নাম চেয়েছিল রাজভবন। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সেই নাম রাজভবনকে দিতে রাজি নয় নবান্ন। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে নবান্নের শীর্ষ মহলে আলোচনা হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, তৃতীয় নাম পাঠানোর প্রস্তাব রাজ্য মানবে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “মাথা নিচু করছি না। কখনও এই কাজগুলো নিয়ে আমাদের সমস্যা হয়নি। এই প্রথম আমরা সমস্যার মুখে পড়েছি। শুভবুদ্ধির বিকাশ ঘটুক।”
প্রসঙ্গত, এ দিনই রাজভবনে একটি অনুষ্ঠানের পরে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে কমিশনার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব ছিল, “সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
পরে নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, এ ব্যাপারে রাজ্যপালের এক্তিয়ার সীমিত। তিনটি নাম পাঠানোর পদ্ধতি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু সেই বিধি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ক্ষেত্রে খাটে না। অতীতে বরাবর একটি নামেই সায় দিয়ে এসেছে রাজভবন। ফলে চলতি পরিস্থিতি কার্যত নজিরবিহীন।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কমিশনার নিয়োগ নিয়ে জট কবে কাটবে, তা স্পষ্ট হল না। বরং রাজভবন-নবান্নের মধ্যে নতুন কোনও স্নায়ুযুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ ফুরিয়েছে। তার আগে থেকেই আমরা উদ্যোগী হয়েছি এবং নাম পাঠিয়েছি। প্রথম জন না হলে তাঁর (রাজ্যপাল) ফাইল ফেরত দেওয়া উচিত। সেটা হয়নি। ফলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে কোনও লোক নেই। সামনে পঞ্চায়েত-পুরসভা নির্বাচন রয়েছে। এটা কেন?”
গত ১৮ মে রাজভবনে পাঠানো প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের একক নামে সায় দেননি রাজ্যপাল। দ্বিতীয় একটি নাম চাওয়া হয়েছিল ওই পদের জন্য। তাতে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজিত রঞ্জন বর্ধনের নাম পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু তার পরেও আরও একটি নাম রাজভবন চেয়ে পাঠায় বলে নবান্ন সূত্রের খবর। বস্তুত, গত ২৮ মে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে অবসর নিয়েছেন সৌরভ দাস। ফলে আপাতত খালি রয়েছে সেই পদ। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার না থাকাকালীন পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়া সম্ভব নয়।