ফাইল চিত্র।
নিজের নিজের জেলায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি করার কথা সম্প্রতি ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বদলির সব থেকে সহজ প্রক্রিয়া ‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার’ বা আপস-বদলির জন্য আবেদন করেও শতাধিক শিক্ষকের বদলি হয়নি। অভিযোগ, শিক্ষা দফতরে অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মিউচুয়াল বদলি চাওয়া অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।
২০১৮-র অগস্টে আপস-বদলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ফের নোটিস দিয়ে তা চালু করা হয় ২০১৯ সালের জুনে। তখন এই ধরনের বদলির আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতায় স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র অফিসে শুনানি শুরু হয়। এসএসসি জানিয়ে দেয়, শুনানির পরে শিক্ষক বা শিক্ষিকার যে-স্কুলে বদলি হল, ৫ ডিসেম্বর থেকে এক মাসের মধ্যে সেখানে তাঁকে যোগ দিতে হবে।
শিক্ষকেরা জানান, আপস-বদলির ক্ষেত্রে এত দিন এসএসসি-র সুপারিশেই নতুন স্কুলে যোগ দেওয়া যেত। অভিযোগ, কয়েকটি জেলায় ওই সংস্থার সুপারিশে আবেদনকারীরা নতুন স্কুলে যোগ দিতে পারছেন না। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র আনতে হবে। কারণ, স্কুলে শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেয় পর্ষদই। কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ, পর্ষদ তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে, কোনও স্কুলে শূন্য পদে যোগ দেওয়ার জন্য প্রার্থীকে তারা নিয়োগপত্র দিতে পারে। কিন্তু আপস-বদলির ক্ষেত্রে তাদের তরফে কোনও নিয়োগপত্র দেওয়া হবে না। ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, আপস-বদলির মতো সহজ প্রক্রিয়ায় এত জটিলতা হবে কেন?
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘‘এসএসসি-র বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে আমার মতো আপস-বদলি চাওয়া কিছু শিক্ষক নতুন স্কুলে যোগ দিতে পারেননি। সেই সময়সীমা পেরোনোর পরে এসএসসি ৩ জানুয়ারি নতুন স্কুলে যোগদানের সময়সীমা ফের এক মাস বাড়ি দেয়।’’ শিক্ষকেরা জানান, বর্ধিত সময়সীমাও ৩ ফ্রেব্রুয়ারি শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও এই সমস্যার সুরাহা হয়নি।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘এসএসসি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সহজ পদ্ধতির আপস-বদলিও আটকে আছে। এই সমস্যায় পড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ১০-১৫ দিন ছুটি নষ্ট করে জেলা পরিদর্শক, এসএসসি, পর্ষদ অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ুয়ারাও।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষকদের আপস-বদলির মাধ্যমে নতুন স্কুলে গেলে আমাদের সেই শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে নতুন কোনও নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা নয়। আমরা শিক্ষা দফতরের কাছে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানতে চেয়েছি। শিক্ষা দফতর যা বলবে, তা-ই হবে।’’