মুকুল রায়। —ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের শারীরিক পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও সঙ্কট কাটেনি, জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে তাঁকে বিশেষ পর্যবেক্ষণেই রাখা হয়েছে। ভেন্টিলেশনে না থাকলেও অক্সিজেন চলছে মুকুলের। তিনি ঘোরের মধ্যে আছেন বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে।
কলকাতার বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছে বিশেষ মেডিক্যাল দল। সেই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএন সিংহ। তা ছাড়াও এই দলে বিভিন্ন বিভাগের অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা রয়েছেন। তাঁরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে।
গত বুধবার মুকুলের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার পরেও সঙ্কটজনক ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার মুকুলের শারীরিক পরিস্থিতির আগের চেয়ে সামান্য হলেও উন্নতি হয়েছে। যে অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল, পরিস্থিতি তার চেয়ে ভাল। তবে এখনও তিনি সঙ্কটজনক অবস্থাতেই রয়েছেন। তাঁকে আইসিইউতে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। এখন ভেন্টিলেশনে না থাকলেও অক্সিজেন দিতে হচ্ছে মুকুলকে।
পরিবার সূত্রে খবর, গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কাঁচরাপাড়ায় নিজের বাড়িতে বাথরুমের সামনে পড়ে গিয়ে চোট পান মুকুল। সংজ্ঞাও হারান। এর পর রাত ১১টা নাগাদ বেসরকারি হাসপাতালটিতে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুকুলের মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। তার পর থেকে তাঁকে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হয়েছে। তবে অক্সিজেন সাপোর্টের প্রয়োজন হচ্ছে মুকুলের।
কাঁচরাপাড়ায় যুগল ভবনের দোতলায় থাকতেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল। ২০২১ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগছেন। পাশাপাশি, ডিমেনশিয়াও রয়েছে তাঁর। এই বছরের এপ্রিল মাসেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও।
রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দিকে মুকুল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন এবং তাঁর জনপ্রিয়তা গড়ে ওঠে। দীর্ঘ দিন তৃণমূলে থাকার পরে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। জেতার পর জুন মাসে তিনি আবার তৃণমূলে ফেরেন। খাতায়কলমে মুকুল এখনও বিজেপির বিধায়ক। তবে দীর্ঘ দিন রাজনীতি থেকে তিনি দূরে রয়েছেন।