মুকুল রায়। —ফাইল চিত্র
এখনও সঙ্কটজনক মুকুল রায়ের শারীরিক পরিস্থিতি। বুধবার তাঁর মস্তিষ্কে একটি অস্ত্রোপচার হয়। কলকাতার ফুলবাগান এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। মুকুলের চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছে বিশেষ মেডিক্যাল দল। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএন সিংহ। তা ছাড়াও এই দলে রয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন আইসিইউ-তে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে মুকুলকে। কখন ভেন্টিলেশনের সহায়তা থেকে প্রবীণ এই রাজনীতিককে বার করা হবে বা না হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
অনেক দিন ধরেই অসুস্থ মুকুল। রাজনীতি থেকেও এখন অনেক দূরে। বুধবার আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কাঁচরাপাড়ায় নিজের বাড়িতে বাথরুমের সামনে পড়ে গিয়ে চোট পান মুকুল। সংজ্ঞাও হারান। এর পর রাত ১১টা নাগাদ বেসরকারি হাসপাতালটিতে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুকুলের মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। তার পর থেকে তাঁকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনেই রাখা হয়েছিল।
কাঁচরাপাড়ায় যুগল ভবনের দোতলায় থাকেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল। ২০২১ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগছেন। পাশাপাশি, ডিমেনশিয়াও রয়েছে তাঁর। এই বছরের এপ্রিল মাসেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও।
এক সময় তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ ছিলেন মুকুল। রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ‘বিশ্বস্ত সৈনিক’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। পরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম প্রতীকে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ভোটে লড়েন মুকুল। জয়ীও হন। ভোটের ফলঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটে মুকুলের। যা ঘিরে সরগরম হয় রাজনীতির অলিন্দ। এর পর মুকুলের বিধায়ক পদ বাতিল নিয়ে সরব হয় বিজেপি। যা নিয়ে টানাপড়েন চলে। সেই সময় থেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে ‘উধাও’ হয়ে যান মুকুল।