কৃষি ভবনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত।
কৃষি ভবনে দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রজ্ঞা নিরঞ্জন জানিয়ে দিলেন, তিনি দেখা করতে পারবেন না। পাল্টা তৃণমূল জানাল, যত ক্ষণ না মন্ত্রী দেখা করছেন, তারাও কৃষি ভবন ছাড়বে না। মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে।
যন্তর মন্তর থেকে কাঁধে চিঠির বোঝা নিয়ে কৃষি ভবনে পৌঁছেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ সেখানে তারা পৌঁছে গেলেও, রাত্রি পৌনে আটটা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী প্রজ্ঞা নিরঞ্জন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেননি। দফতরের ভিতর থেকেই ফেসবুক লাইভে তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা অভিযোগ করেন, সময় দিয়েও দেখা করছেন না কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কখন তিনি দেখা করবেন, কথা বলবেন, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না বলে দাবি কল্যাণের। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বলেন, ‘‘মন্ত্রীর কথাতেই সময় বদলেছিল। এখন তিনিই দেখা করছেন না। দেখা করবেন কি না, তা-ও বলছেন না। তবে আমরা দেখা না করে যাব না।’’ তার পরেই তৃণমূল জানায়, মন্ত্রীর দফতরের কর্তারা বলছেন, তিনি দেখা করতে পারবেন না। তবে অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দেখা করে তবেই তিনি সেখান থেকে বেরোবেন।
কৃষি ভবনের ভিতর থেকে ভিডিয়োবার্তায় অভিষেক অভিযোগ করেন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মন্ত্রী দেখা করার পরেই এই কৌশল নিয়েছেন। তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ আরও বলেন, ‘‘মন্ত্রী বলেছেন, দেখা করবেন না। আমরাও বলছি, দেখা না করে এখান থেকে যাব না।’’
রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘মন্ত্রীর তরফে বলা হয়, পাঁচ জনের বেশি প্রতিনিধির সঙ্গে তিনি দেখা করবেন না। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১০০ দিনের কাজে টাকা না পাওয়া ভুক্তভোগীই রয়েছেন আট জন।’’
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের ডেপুটি প্রজ্ঞা তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুপুর ১২টায় দেখা করবেন। পরে সেই সময় বদল হয়। যে কারণে যন্তর মন্তরে তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচিও সকাল ৯টার বদলে শুরু হয় দুপুর ১টার সময়।
বিকালে অবশ্য গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কৃষি ভবনে গিয়েই দেখা করে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১০০ দিনের কাজে বাংলায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একটি চার পাতার চিঠিও দিয়েছেন শুভেন্দু। বেরিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যে রেগার (১০০ দিনের) কাজে খুব কম করে হলেও পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
অভিষেক ছাড়াও রয়েছেন তৃণমূলের সমস্ত সাংসদ, চার জন মন্ত্রী এবং ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়া বেশ কয়েক জন। মোট ৪০ জনের প্রতিনিধি দল পৌঁছেছে কৃষি ভবনে। অভিষেক যন্তর মন্তরেই ঘোষণা রেখেছেন, মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচক না হলে অম্বেদকর ভবনে গিয়ে তিনি দলের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এখন দেখার বিষয়, সময় দিয়েও মন্ত্রী দেখা না করার অভিঘাত ঠিক কী হয়।