—প্রতীকী ছবি।
উচ্চ প্রাথমিকে প্রথম পাঁচ দিনে তিন হাজারের মতো চাকরিপ্রার্থীর কাউন্সিলিং শেষ হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি সূত্রে জানা গিয়েছে, এঁদের মধ্যে তিনশোর কিছু বেশি চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘২২ নভেম্বর থেকে আবার কাউন্সেলিং শুরু হয়ে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এখনও পর্যন্ত ১০ শতাংশের কিছু বেশি চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিত আছেন।’’
প্রশ্ন উঠেছে, নিয়োগের দাবিতে যেখানে টানা আন্দোলন চলছে, সেখানে কাউন্সেলিং শুরুর পরে ১০ শতাংশই বা অনুপস্থিত কেন? কমিশনের কর্তাদের একাংশের মতে, এই অনুপস্থিতির সংখ্যাটা প্রায় স্বাভাবিকই বলা যায়। যদিও চাকরিপ্রার্থীদের মতে, অনুপস্থিতির সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি।
চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ জানাচ্ছেন, উচ্চ প্রাথমিকের বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পরে প্রায় দশ বছর ধরে তাঁদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এখনও নিয়োগ অধরা। এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, ‘‘এখনকার কাউন্সেলিংয়ে আমরা সুপারিশপত্র পাব না। কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নেই। শুধু স্কুল নির্বাচন করলে এসএসসি আমাদের সম্মতিপত্র দেবে। নিয়োগ কবে হবে এখনও নিশ্চিত নয় ইতিমধ্যে অনেকেই অন্য পেশায় চলে যেতে পারেন।’’ এসএসসি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ যখন নেওয়া হয়েছিল, কেউ কেউ বলেছিলেন তাঁরা পিএইচ-ডি করছেন, অনেকে নেট পাশও ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ অন্য চাকরি নিয়ে চলে যেতে পারেন।’’
তবে তিনশোর বেশি প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে ভাগ্য খুলেছে অপেক্ষমান চাকরিপ্রার্থীদের। উচ্চ প্রাথমিকের ১৪ হাজার ৩৩৯ শূন্যপদে মেধাতালিকায় নাম রয়েছে ১৩ হাজার ৩৩৪ জনের। তার মধ্যে ন’হাজার প্রার্থীর কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। অপেক্ষমান প্রার্থী চার হাজারের মতো। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ৩০০ জন অনুপস্থিত থাকায় ৩০০-র অনেক বেশি শূন্যপদ তৈরি হতে পারে।
কী ভাবে?
চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, এক জন সাধারণ মহিলা প্রার্থী অনুপস্থিত থাকলে একটি মেয়েদের স্কুল এবং ছেলে ও মেয়ে উভয়েই পড়ে এ রকম একটি স্কুল, দু’টো শূন্যপদ তৈরি হয়। এক জন পুরুষ চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিত থাকলে শুধুমাত্র একটি ছেলেদের স্কুলেই শূন্যপদ তৈরি হয়।
আবার যদি সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থী অনুপস্থিত থাকেন এবং তিনি যদি সাধারণ প্রার্থীর সমান নম্বর পেয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে শূন্যপদ তৈরি হবে চারটি। তখন সাধারণ মহিলা প্রার্থীর অনুপস্থিতির কারণে তৈরি হওয়া দু’টি শূন্যপদের সঙ্গে জুড়বে সংরক্ষিত আরও দু’টি স্কুলের শূন্যপদ। একই ভাবে সংরক্ষিত পুরুষ প্রার্থী অনুপস্থিত থাকলে দু’টি শূন্যপদ তৈরি হবে।
চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘৩০০-র মতো প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে এক হাজারের মতো শূন্যপদ তৈরি হতে পারে। পুরো কাউন্সেলিং শেষ হলে আড়াই হাজারের মতো শূন্যপদ তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ অপেক্ষমান চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে আড়াই হাজার জন কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পেতে পারেন।’’