ছবি: সংগৃহীত।
কোভিড ১৯ নিয়ে এখনও ভুল ধারণার অন্ত নেই জনসাধারণের একাংশের মধ্যে। ধারাবাহিক ভাবে সেই ভুল ধারণার বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ বার প্রচারে উঠে এসেছে মশার মাধ্যমে করোনা ছড়ায় কি না, সেই প্রসঙ্গ। গত বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব মশা দিবস’ থেকেই এই প্রচার শুরু করেছে ডব্লিউএইচও। সে প্রচার এখনও অব্যাহত। প্রচারের মূল বিষয়, মশার কামড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়ায় না। ড্রপলেটের মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়ায়।
ডব্লিউএইচও-র সঙ্গে যুক্ত গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, অনেক ভুল ধারণার মধ্যে মশার কামড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়ায়, তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই প্রচার শুরু হয়েছিল। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই প্রচারটা চলেছে। সে কারণে তার বিরুদ্ধেই পাল্টা প্রচার
চালাতে সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নিয়েছে ডব্লিউএইচও। এক গবেষকের কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত প্রামাণ্য কোনও তথ্য মেলেনি যে মশার কামড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। কিন্তু তার পরেও সেটা নিয়ে মিথ্যে প্রচার চলছে।’’
গবেষকদের একাংশ এ-ও জানাচ্ছেন, করোনা নিয়ে ভুল ধারণার পরিবর্তে বর্ষার মরসুমে মশার কামড়ে ডেঙ্গি ছড়ায়, তার উপরে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সেটা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরুও করেছে ডব্লিউএইচও। রাজ্যের স্বাস্থ্য
দফতরও মশাবাহিত রোগ নিয়ে সম্প্রতি প্রচার শুরু করেছে। কলকাতা-সহ অন্য পুরসভাও নিজেদের মতো করে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ে সব জায়গায় সারা ক্ষণ আলোচনা, প্রচার চলছে। তার মধ্যে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে প্রচার কিছুটা পিছনের সারিতে চলে গিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘অন্য বছরগুলিতে বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি নিয়ে পুরোদমে প্রচার চলে। কিন্তু করোনার কারণে এ বছর সেই প্রচারের গুরুত্ব কিছুটা হলেও কমেছে।’’
কিন্তু সেটাই বিপদের কারণ বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, এমন তো নয় যে করোনা হয়েছে বলে ডেঙ্গি হবে না! বরং এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে ডেঙ্গির সংক্রমণ শুরু হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপরে অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হবে। এমনিতেই বর্তমানে সমস্ত চিকিৎসার অভিমুখ করোনাকেন্দ্রিক। সেখানে অন্য কোনও রোগের প্রাদুর্ভাব যদি শুরু হয়, তা হলে সামলানো যাবে না বলেই আশঙ্কা প্রশাসনের একাংশের। এক কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার এই মুহূর্তে গৌণ হয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর ডেঙ্গি নিয়ে আরও সতর্ক থাকা উচিত সবার। না হলে আর একটা রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামো এই মুহূর্তে রাজ্যে নেই।’’