সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র।
সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। তাই সন্ধ্যা নামলেই খেলার মাঠ ছাড়তে হবে মহিলাদের।
একটি ক্লাব কর্তৃপক্ষের এমন নোটিস ঘিরে সরগরম মেদিনীপুর শহর। ক্লাবের যুক্তি, নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। পুলিশের অবশ্য দাবি, শহরে নিরাপত্তার ঘাটতি নেই।
শহরের রাঙামাটিতে রয়েছে ডায়মন্ড স্পোর্টিং ক্লাব। সেই ক্লাবের মাঠে ঝোলানো হয়েছে নোটিস। তাতে লেখা, খেলার মাঠে থাকার সময় বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা। আর মাঠে মহিলাদের থাকার সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। বলা হয়েছে, নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মহিলারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এবং এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন। খেলার মাঠে এসেছে সমানাধিকার। ব্যাটসম্যান নয়। ব্যবহার হচ্ছে ‘ব্যাটার’ শব্দবন্ধ। সেই খেলার মাঠেই এমন ভেদাভেদ! তা-ও আবার মেদিনীপুরের মতো শিক্ষা, সংস্কৃতিতে আগুয়ান শহরে!
ক্লাবের সম্পাদক রূপক মণ্ডলের ব্যাখ্যা, ‘‘অতি সম্প্রতি আপত্তিকর কিছু ঘটনা ঘটেছিল। তাই এমন নোটিস দিয়েছি মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই। আমরা বিতর্ক চাই না।’’ শহরের পুরনো ক্লাবগুলির মধ্যে এই ক্লাব অন্যতম। এখন রাঙামাটিতে ঘন বসতি হয়েছে। কিছু দূরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রচুর মেস রয়েছে এলাকায়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সেখানে থাকেন। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শীতল সাহাও বলেন, ‘‘একটু বেশি রাত হলে একটু অন্য রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এখানে। তাই এই নোটিস।’’ অর্থাৎ ইঙ্গিতটা সেই মহিলাদের নিরাপত্তার দিকেই। মেদিনীপুরের এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, ‘‘শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিকঠাকই রয়েছে। শহর সুরক্ষিতই রয়েছে।’’
মেদিনীপুরের বিধায়ক এখন জুন মালিয়া। তিনি বলছেন, ‘‘নোটিসের বিষয়টি এই শুনলাম। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’’ স্থানীয়দের একটা বড় অংশেরই বক্তব্য, মাঠ থেকে বেরোনোর সময় নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে পুরুষ, মহিলা ভাগাভাগি অনভিপ্রেত। মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহীরও বক্তব্য, ‘‘খেলার মাঠে পুরুষ, মহিলা ভাগাভাগি উচিত নয়।’’