—ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ ভাসলেও বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণে আউস-আমন চাষের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছিল। চাষির ঘরে আশার আলো এনে দিয়েছে গত দু’দিনের বৃষ্টি। এ বার চাষের দুরবস্থা কিছুটা বদলাবে বলে আশা করছে কৃষি দফতরও। ৭ অগস্ট পর্যন্ত
ধান চাষের হাল ‘অত্যন্ত খারাপ’ ছিল। ১৫ অগস্টের মধ্যে পরিস্থিতি না-বদলালে বিকল্প চাষে নামার ব্যাপারে নবান্ন থেকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ গিয়েছে জেলায় জেলায়।
তার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে টানা বৃষ্টিতে অবস্থা কিছুটা পাল্টাতে পারে বলে জানাচ্ছেন কৃষিকর্তারা।
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছিল। উঁচু জমিতে চাষ তেমন হয়নি। বৃষ্টি হওয়ায় আশা করছি, আগামী সপ্তাহে দ্রুত পরিস্থিতি বদলাবে। সরকার বিকল্প পরিকল্পনাও করে রেখেছে। চাষিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, গত বছর ৪০.৯৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে আউস-আমন চাষ হয়েছিল। এ বারের লক্ষ্যমাত্রা ৪২.৯৪ লক্ষ হেক্টর। গত বছর ৭ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের ২৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধানের বীজতলা তৈরি ও ধানচারা রোয়ার কাজ হয়ে গিয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত ১৬ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়নি। হাতে সময় মেরেকেটে ১৫-২০ দিন। তার মধ্যে প্রায় ২৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করে চারা রোয়ার কাজ কতটা সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কৃষিকর্তারা।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে তুলনামূলক ভাবে চাষ ভালই হয়েছে বলেই জানাচ্ছে কৃষি দফতর। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা শোচনীয়। সারা রাজ্যে মাত্র ৩৭% জমিতে ধান
রোয়ার কাজ হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল বলে মনে করছেন অনেকে। হুগলির অবস্থা সব চেয়ে খারাপ। ওই জেলায় এক লক্ষ ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত চাষ হয়েছে মাত্র ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে। হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিস্থিতিও হুগলির
মতোই। তবে রাজ্যের শস্যভাণ্ডার বলে কথিত বর্ধমানের অবস্থা সেই তুলনায় কিছুটা ভাল।
কৃষিকর্তারা জানাচ্ছেন, চাষের জন্য আরও অন্তত এক দফায় টানা বৃষ্টিপাত দরকার। মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে গড়ে ৩০-৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ১৫ অগস্টের মধ্যে চাষের এলাকা বাড়বে বলেই আশা করছেন কৃষিকর্তারা।