মহাজাতি সদনে তৃণমূলপন্থী বিদ্বজ্জনদের সাংবাদিক বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান চেয়ে যাঁরা পথে নেমেছিলেন, এ বার সেই তৃণমূলপন্থী বিদ্বজ্জনেরাই মোদী সরকারকে পাল্টে দেওয়ার কথা বললেন। শনিবার মহাজাতি সদনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, পিডিএস নেতা সমীর পুততুণ্ড, গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, চিকিৎসক দেবপ্রিয় মল্লিক, নকশালপন্থী নেতা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য, অধ্যাপক অরূপশঙ্কর মৈত্র , ভাস্কর গুপ্ত প্রমুখ।
পূর্ণেন্দু বলেন, ‘‘১০ বছর ধরে যা চলছে, তাতে গোটা দেশ এক ভয়াবহ জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। বর্তমান শাসকদলকে সরিয়ে দেশ বাঁচানোর সময় এসেছে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে হটাতে হবে ২০২৪ সালে। সব তর্কবিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে এদের সরাতে হবে। নীতিগত লড়াই অনেক করা যাবে, কিন্তু আগামী দিনে যদি এদের হারানো না যায়, তা হলে ফ্যাসিবাদীদের চূড়ান্ত চেহারা নেবে এই কেন্দ্রের সরকার।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও আক্রমণ করা হচ্ছে। নিউজ় চ্যানেলকে টার্গেট করে তাদের সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এই জমানায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এক বিষম বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়টা জরুরি অবস্থাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’’
পিডিএস নেতা সমীর বলেন, ‘‘আমরা এক সময় সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এক হয়েছিলাম। সেই সময় দেখা হয়নি, কে কোনও আদর্শ ও নীতি নিয়ে লড়াই করছি। এক সময় জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আমরা জনমত নিয়েছিলাম। আর আজকের আন্দোলন সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই আন্দোলন ছিল স্থানীয় ঘটনা। আজ দেশের সমস্যা। বিজেপি সরকারকে আমরা সরাতে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ সরকার বিরোধী আন্দোলনে এটা ভাবা জরুরি নয় যে, এই সরকার চলে গেলে কারা সরকার গড়বে। বিধানসভা ভোটের সময় যে ভাবে আমরা বলেছিলাম, নো ভোট টু বিজেপি, এ বার শুধু তা বললে হবে না। বলতে হবে, বিজেপিকে হটাতে বিরোধীদের ভোট দাও।’’
গায়ক নচিকেতা গান গেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন। সভায় না এলেও, একটি লিখিত বার্তা পাঠিয়েছিলেন গায়ক কবীর সুমন। তাঁর পাঠানো বার্তাটি পাঠ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু।