মোকার আগাম সতর্কতা হিসাবে শনিবার সকাল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের উপকূলের থানাগুলিতে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।
দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে মোকা। শনিবার কাকভোরেই অতি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে। গত ৬ ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার গতিতে এগোনো মোকার প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস।
শনিবার সকালে আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, মায়ানমারের সিত্তে বন্দর থেকে মোকার দূরত্ব ৬৯০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে মোকার দূরত্ব ৭৬০ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে আরও জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে করতে এগিয়ে চলেছে মোকা। আরও ৩০ ঘণ্টা এগোনোর পর রবিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ স্থলভূমিতে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, মায়ানমারেই মোকার মূল প্রভাব পড়বে। তবে মোকা বয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় তার প্রভাব পড়তে পারে। তখন ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালিতে এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। ইতিমধ্যে ঢাকা এবং ইয়াঙ্গন প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করেছে এবং বিপর্যয় পরবর্তী প্রস্তুতি সেরে রেখেছে।
শনিবার হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, মোকার প্রভাবে সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের জেলাগুলোর মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর।
শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ওই সময় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়াতেও। রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং নদিয়া জেলায়। উত্তরবঙ্গের সব জেলায় সোমবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার কলকাতার আকাশ মূলত মেঘলা থাকবে। গরম এবং আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি অনুভূত হবে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
মোকার আগাম সতর্কতা হিসাবে শনিবার সকাল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের উপকূল থানাগুলিতে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। সকাল থেকে কুলতলি থানার কৈখালী, মাতলা নদীতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে মকড্রিল হয়েছে। নদী উপকূল এলাকার গ্রামের বাসিন্দাদের সাবধান করা হচ্ছে। কুলতলি ব্লক প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে শুকনো খাবার, ত্রিপল মজুত করা হয়েছে বলে খবর। সুন্দরবনের প্রতিটি এলাকায় বিশেষ নজরদারি করছে প্রশাসন।