চলতি সপ্তাহেই তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ তৈরি হলে তা কোন দিকে ধেয়ে যাবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যা আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পরই শক্তি সঞ্চয় করে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। যার নাম হবে ‘মোকা’। কিন্তু কোন পথে এগোবে এই ঘূর্ণিঝড়? কবেই বা স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে ‘মোকা’?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী বুধবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। তার পর বৃহস্পতিবার উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিক বরাবর পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। এর পরই ‘মোকা’র পথ বদল হতে পারে। বাঁক নিয়ে তা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিক বরাবর বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলের দিকে এগোতে পারে।
তা হলে কি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ বা মায়ানমারের দিকেই যেতে পারে? আবহাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি (মডেল) অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ অথবা মায়ানমারে দিকেই যেতে পারে ঝড়। সে ক্ষেত্রে ওই দুই দেশের কোথাও আঘাত হানতে পারে ‘মোকা’। তবে পুরোটাই সম্ভাবনা। এই ব্যাপারে এখনই আলিপুর আবহাওয়া দফতর এবং মৌসম ভবন নিশ্চিত ভাবে কিছু জানায়নি। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজরদারি চালাচ্ছে তারা। মনে করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহের শেষেই স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। তবে তার ল্যান্ডফল (যেখানে ঝড় আছড়ে পড়ে) কোথায় হবে, তা এখনই জানা যায়নি। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই এই ব্যাপারে দিশা মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, গত কয়েক বছরে মে মাসে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছিল এই রাজ্যেও। ২০২০ সালে আমপানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই ঝড় মোকাবিলায় সতর্ক হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কী প্রভাব পড়বে বাংলায়, তা এখনও জানা যায়নি। তবে ঘূর্ণিঝড় ঘিরে আশঙ্কার মধ্যেই রাজ্যের আবহাওয়ায় বদল ঘটেছে।
গত কয়েক দিন আগেই বৃষ্টির জেরে স্বস্তি ফিরেছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আবার তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে, বুধবার দক্ষিণের সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আলিপুর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে রাজ্যে দখিনা বাতাস প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি গিয়েছে। সেই জায়গায় রাজ্যে প্রবেশ করছে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা গরম এবং শুষ্ক বাতাস। এর ফলেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এই রাজ্যে। রবিবার থেকেই কলকাতায় আবার ফিরেছে গরমের অস্বস্তি ভাব। সোমবারও সেই পরিস্থিতি বহাল রয়েছে। এর মধ্যেই তাপপ্রবাহের সম্ভাবনার কথা জানাল আবহাওয়া দফতর। তবে এই পরিস্থিতির মধ্যে এখন সকলেরই নজর রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের দিকে। কোন পথে শেষমেশ ‘মোকা’ অতিক্রম করে, সে দিকেই নজর রেখেছে হাওয়া অফিস।