রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট হলে চুপ করে থাকবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই প্রসঙ্গে তিনি উপমা টানেন উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’ নাটক থেকেও। সোমবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্যে আইনগত বা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলে এক জন রাজ্যপাল শেক্সপিয়রের হ্যামলেটের মতো ‘টু বি অর নট টু বি’-র সংশয় নিয়ে বসে থাকবেন না। কারণ, শিক্ষা আমাদের এটাই শেখায়।” এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ রাজ্যে রাজ্যপাল হিসাবে আসার পর নবান্ন আর রাজভবনের মধ্যে ‘সমন্বয়ে’র ইঙ্গিতই পাওয়া গিয়েছিল। সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা হরফে লেখা শুরু করেছিলেন রাজ্যপাল। ওই অনুষ্ঠানে আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ভাষা, সংস্কৃতির প্রতি তাঁর যে গভীর অনুরাগ আছে বহু বার ব্যক্ত করেছেন আনন্দ। মাঝে অবশ্য রাজভবন আর নবান্নের মাঝে দূরত্ব বাড়ে। এর নেপথ্যকারণ ছিল রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাত।
গত জানুয়ারি মাসে রাজভবনে রাজ্যপাল এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মধ্য বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকশেষে শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপাল একই সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন, এখন থেকে রাজভবন এবং শিক্ষা দফতরের মধ্যে বিরোধ নয়, সমন্বয় জারি থাকবে। তার কিছু দিন পরেই রাজভবনের তরফ থেকে চিঠি পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গতিবিধি এবং আর্থিক লেনদেনের হিসাব চাওয়া হয়। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় বিকাশ ভবন। ক্ষোভপ্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। রাজ্যপালের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন ঘিরেও প্রশ্ন ওঠে। রাজ্যপালকে ‘মত্ত হস্তী’র সঙ্গে তুলনা করে তাঁর এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রীও।
তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে নিয়োগ সংক্রান্ত বিলটি দীর্ঘদিন ধরে রাজভবনে আটকে আছে। সেটি ছাড়ার ব্যাপারে রাজ্যপালকে কিছু দিন আগেই বার্তা পাঠিয়েছিল রাজ্য। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যপাল আনন্দ বোস জানান, বিষয়টি নিয়ে যথাসময়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই সব কিছুর আবহে রাজ্যপালের হ্যামলেট-মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এই সব কিছুর আবহে রাজ্যপালের হ্যামলেট-মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।