ছবি: সংগৃহীত।
এ বার আর ভোটে লড়তে চান না বলে জানালেন জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা। এ কথা জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের একাংশকে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েও রেখেছেন। আগামী বুধবার তিনি কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ি ফিরছেন। তারপর জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্তকে সরকারি ভাবে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বলে মনস্থির করেছেন জলপাইগুড়ির দু’বারের কংগ্রেস বিধায়ক।
শনিবার কলকাতা থেকে সুখবিলাস ফোনে বলেন, “এ বার জলপাইগুড়ি গিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকীবাবুকে (সেনগুপ্ত) জানিয়ে দেব, আর ভোটে লড়ব না। আপনারা অন্য লোক খুঁজে নিন।” দল বারণ করলেও তিনি আর শুনবেন না বলেও ভেবে রেখেছেন। অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে বিধায়ক বললেন, “সাতাত্তর বছর বয়স হল। আর কত পারব বলুন তো! কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছি।”
বছরখানেক পরে বুধবার জলপাইগুড়ি ফিরবেন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন আমলা সুখবিলাস। বিধায়কের ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা শুভ্রজিৎ দাসের মেয়ের বিয়েতে আসবেন বিধায়ক। বছরখানেক ধরে জলপাইগুড়িতে অনুপস্থিত থাকা নিয়ে কংগ্রেস এবং বামেদের অন্দরে ক্ষোভ রয়েছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যেও জানিয়েছেন অনেকে নেতা। সে-সব কথা কানেও গিয়েছে বিধায়কের। সেই অভিমানেই কি ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত? ফোনের অন্যপ্রান্তে অট্টহাস্য করলেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার। বললেন, “না, না! আমার আবার অভিমান কিসে! এটা আমি অনেকদিন আগেই ভেবেছি। আমার শারীরিক সমস্যা রয়েছে, এটা একটা কারণ। তার পরে আমি লেখালেখি, পড়াশোনা নিয়ে এত ব্যস্ত থাকি যে সময়ও পাই না। মানুষ আমার থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে।”
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি দলের কর্মসূচিতে শেষবার ছিলেন জেলায়। তা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রসঙ্গে সুখবিলাস বলেন, “ক্ষোভ থাকাই তো স্বাভাবিক। আমি জেলায় দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারি না। তবে বিধায়ক হিসেবে কাজে কোনও ফাঁক রাখিনি। আমার এলাকা উন্নয়ন তহবিল খরচ করেছি। তার সঙ্গে অতিরিক্ত রাজ্যসভার সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকেও বরাদ্দ এনেছি।” বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্তের কথায়, “বিধায়ককে নিয়ে কোনও ক্ষোভ নেই। উনি জলপাইগুড়ি আসছেন। তার পরে ওঁর সঙ্গে কথা হবে।”
বর্তমান কংগ্রেস বিধায়ক শেষপর্যন্ত ভোটে না লড়লে জলপাইগুড়ির রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ এবং চর্চা হবে। ইতিমধ্যেই বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক জলপাইগুড়ি সদর আসনের দাবিদার। এক সময়ে জলপাইগুড়ি আসনটি ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলেই ছিল। বর্তমান বিধায়ক না লড়লে বামেরা ফের কংগ্রেসের থেকে আসনটি দাবি করুক, সেই চাপও ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে দেওয়া হতে পারে বলে খবর। যদিও জেলা কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “এ সব অবান্তর কল্পনার কোনও উত্তর দিতে চাই না।”