strike

সকাল থেকেই রাস্তায় বামেরা, অবরোধ, বিক্ষোভে হরতালে মিশ্র প্রভাব রাজ্য জুড়ে

রাস্তায় লোকও ছিল কম। হরতাল সফল করতে সকাল থেকে ট্রেন, সড়ক অবরোধ করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৫
Share:

পূর্ব মেদিনীপুরের রাস্তায় অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।

বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার হরতালে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জেলায় জেলায়। বিভিন্ন এলাকায় দোকান, বাজার হাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় লোকও ছিল কম। হরতাল সফল করতে সকাল থেকে ট্রেন, সড়ক অবরোধ করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তা হঠাতে কোনও জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধ্বস্তিও হয়েছে। তবে মোটের উপর হিংসাত্মক ঘটনা তেমন কিছু ঘটেনি। তবে জেলার অনেক জায়গায় বাস না চলায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে ট্রেন থেকে নেমে আসা যাত্রীদের।

Advertisement

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে হরতাল পালনের উদ্দেশ্যে বামেদের অবস্থান বিক্ষোভের ছবি উঠে এসেছে। জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি এলাকায় অধিকাংশ দোকানপাটই বন্ধ ছিল সকাল থেকে। বাসও চলেছে হাতে গোনা। ধূপগুড়ি-সহ ডুয়ার্স এলাকায় প্রভাব ছিল হরতালের। কোচবিহারে সকাল থেকে চলেনি কোনও বেসরকারি বাস। রাস্তায় নেমে অটো, টোটো চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। সকালের দিকে সরকারি বাস ছাড়ার পর কংগ্রেস কর্মীরা বাস স্ট্যান্ডের সামনে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ তাঁদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। গ্রেফতারও করা হয়েছে বেশ কয়েক জন কংগ্রেস কর্মীকে। হরতালের বিরোধিতা করে কোচবিহারে মিছিল করে তৃণমূল। সংঘাত এড়াতে সকাল থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল সেখানে।

উত্তর দিনাজপুরে হরতালের মিশ্র প্রভাব পড়লেও দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে সে প্রভাব চোখে পড়েনি। সেখানে শুধুমাত্র বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিকই ছিল সকাল থেকে। বালুরঘাটে কিছু দোকান বন্ধ থাকলেও বাজার খোলা ছিল। সেখানকার জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক ছিল। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরে রেল অবরোধ করেন বাম নেতা-কর্মীরা। চোপড়ায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে সেখানে। মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। হাতে গোনা সরকারি বাস চললেও অধিকাংশ বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের যৌথ উদ্যোগে কান্দি বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এই জেলার অধিকাংশ জায়গায় বাজারহাট সকাল থেকেই বন্ধ ছিল।

Advertisement

বর্ধমান শহরের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়নাতেও বামকর্মীরা সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছেন। বর্ধমান-আরামবাগ রোডের মিরেপোতা বাজারে রাস্তা অবরোধ করা হয়। বর্ধমান শহরে মিছিল বেরোনোর পাশাপাশি কার্জন গেট অবরোধ করেন হরতাল পালনকারীরা। পুলিশ সেখান থেকে হঠানোর চেষ্টা করলে গোলাপ ফুল উপহার দেওয়া হয় অবরোধকারীদের তরফে। হুগলির কোন্নগর, হিন্দমোটর এবং ডানকুনির দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ চলেছে। চুঁচুড়ায় ছাত্রদের স্কুলে ঢুকতে দেয়নি বামেদের ছাত্র সংগঠন। বারাসতে চাঁপাডালি মোড়, ডাকবাংলো মোড় অবরোধ করেন হরতালকারীরা। অশোকনগর, কাঁচরাপাড়ায় রেল অবরোধের জেরে ভোগান্তির শিকার হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। অবরোধের জেরে যশোর রোডে তীব্র যাটজট তৈরি হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার শাখাতেও ট্রেন অবরোধ হয়েছিল। যাদবপুর, বারুইপুর, হোটর ও ধামুয়া স্টেশনের মধ্যে অবরোধ হয়েছিল। ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলেও ট্রেন থামানো হয়েছিল কিছু জায়গায়।

দুই মেদিনীপুরের চিত্রটাও অনেকটা এ রকমই ছিল। মেদিনীপুর শহরের রাস্তাঘাট সকাল থেকেই ফাঁকা। পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করেন বাম কর্মীরা। বেলা ৯টা নাগাদ হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কের মহিষাদল বাজারে পথ অবরোধ করা হয়। প্রায় ১ ঘন্টা অবরোধের জেরে বহু যাত্রীবাহী বাস রাস্তায় আটকে পড়ে। জেলার ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের নিমতৌড়ি, ব্রজলাল চক, ৬নং জাতীয় সড়কের মেচগ্রাম, ১১৬বি জাতীয় সড়কের চণ্ডীপুর, রামনগর, হেড়িয়া, দইসাই— এই সব এলাকায় পথ অবরোধ করা হয়েছে। ঝাড়গ্রাম শহরও ছিল শুনশানই। পুরুলিয়াতেও বামেদের মিছিল হয় হরতালের সমর্থনে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement