—ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডে অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত জমা পড়েনি বলে দাবি করল রাজ্য পুলিশ। তাদের বক্তব্য, পুলিশের ১০ সদস্যের তদন্তকারী দল এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সে রকম কোনও অভিযোগ পায়নি। তবে রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত যে সব অভিযোগ মিলেছে, তার যথাযথ তদন্ত এবং তার ভিত্তিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
গত সপ্তাহে দফায় দফায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল সন্দেশখালিতে। রাস্তায় নেমে আন্দোলনে শামিল হন গ্রামের মানুষ। সেই সব বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একেবারে সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল বহু মহিলাকে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এলাকার কম বয়সি সুন্দরী মহিলাদের ‘আলাদা’ চোখে দেখতেন শাহজাহানের শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরার বাহিনীর লোকেরা। জোর করে তাঁদের মিটিং-মিছিলে ডেকে নিয়ে যাওয়া তো বটেই, রাতের দিকেও বাড়িতে ডেকে পাঠানো হত। না গেলেই দেওয়া হত হুমকি। শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ তুলেছিলেন মহিলাদের একাংশ। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সোমবার সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। সন্দেশখালি ঘুরে আসার পর রাজ্যের কমিশনের বক্তব্য ছিল, এমন কোনও মহিলাকে পাওয়া যায়নি যিনি প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছে। মঙ্গলবার সন্দেশখালি যায় জাতীয় মহিলা কমিশন। তারাও সন্দেশখালির মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে রাজ্য জুড়ে তো বটেই, জাতীয় স্তরেও সুর চড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তার প্রেক্ষিতে পুলিশের বক্তব্য, সন্দেশখালির মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতন নিয়ে যে সব কথা প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে, আপাতত তা ভিত্তিহীন এবং অসত্য। সে রকম কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি পুলিশের কাছে।
গত সোমবার রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি ঘুরে আসার পরেই ১০ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রাজ্য পুলিশ। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন ডিআইজি পদমর্যাদার এক মহিলা অফিসার। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তকারী দলটি সন্দেশখালি পরিদর্শনে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের কাছে কোনও মহিলাই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জানাননি। তবে যে সব অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে যারা ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
বুধবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচারের চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। কুণাল বলেন, ‘‘শুধু রাজ্য মহিলা কমিশন নয়, জাতীয় মহিলা কমিশনও বলছে, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি যে যিনি প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন।’’