প্রতীকী ছবি।
বিদেশি এটিএম জালিয়াতদের পাকড়াও করতে এমনিতেই নাজেহাল পুলিশ। তার মধ্যে পিছু ছাড়ছে না দেশি দুষ্কৃতীরাও। পুলিশের দাবি, দেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির আঁতুড়ঘর জামতাড়া। ‘জামতাড়া গ্যাং’ নিত্যনতুন কায়দা বার করে আমজনতার টাকা লোপাট করে চলেছে। যার সর্বশেষ শিকার বারাসতের এক ব্যক্তি।
কলকাতায় এটিএম জালিয়াতিতে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশি সূত্রের খবর, দিল্লিতে থাকা তদন্তকারী দল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও অভিবাসন দফতরের তথ্যের সূত্র ধরে অপরাধীদের চিহ্নিত করেছে। শীঘ্রই জালিয়াতেরা কব্জায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই জালিয়াতির পিছনে যে পূর্ব ইউরোপের কিছু নাগরিক রয়েছে, সেই বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত।
তবে জামতাড়া গ্যাং যে-ভাবে জাল ছড়াচ্ছে, কী ভাবে তার মোকাবিলা করা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। খাস কলকাতায় জালিয়াতি না-করে শহরতলিতে, জেলা শহরে অপরাধের জাল ছড়াচ্ছে তারা। নীলাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় নামে বারাসতের যে-বাসিন্দা এটিএম জালিয়াতির শিকার, তাঁর একটি রেস্তরাঁ আছে। সেনা-কমান্ডো পরিচয় দিয়ে খাবার অর্ডার দেওয়ার ছলে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বারাসত থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি। প্রতারণার এই ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার দুষ্কৃতীরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা।
নীলাদ্রিবাবু জানান, বুধবার রাতে এক ব্যক্তি ফোন করে রেস্তরাঁয় হাজার চারেক টাকার খাবার অর্ডার দেন। বাদুর এনএসজি হাবের কর্মী বলে নিজের পরিচয় দেন তিনি। সেনা পোশাকে নিজের ছবি এবং ফৌজি পরিচয়পত্র পাঠান হোয়াটসঅ্যাপে। কিছু পরে তিনি জানান, নগদ দিতে পারবেন না। সেনা ক্যান্টিনের জন্য বরাদ্দ কার্ড থেকে নেট মারফত টাকা পাঠাবেন। সেই কার্ডের ছবিও পাঠান। এর পরে তিনি টাকা পাঠানোর জন্য নীলাদ্রিবাবুর ডেবিট কার্ডের তথ্য চান। সেই তথ্য ব্যবহার করেই কয়েক দফায় ২৩ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বারাসতে এক মণিপুরী মহিলার এটিএম ‘স্কিমিং’ হয়েছে এবং টাকাও তোলা হয়েছে বারাসত থেকে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি শহরতলি এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে জালিয়াতেরা?
নীলাদ্রিবাবু জানান, তাঁদের রেস্তরাঁ থেকে প্রায়ই খাবার যায় বাদুর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শিবিরে। বুধবার যে-ভাবে তাঁর রেস্তরাঁয় বরাত দেওয়া হয়েছিল, তাতে অনেকেরই সন্দেহ, জালিয়াত মধ্যমগ্রাম-বারাসতের বিভিন্ন সেনা ঘাঁটি এবং তাঁদের গতিবিধি সম্পর্কে অবহিত। সেনা বা আধাসেনারা যে বিভিন্ন রেস্তরাঁ থেকে খাবার কেনেন, তা-ও জানে সে।