Panchasayer Gang Rape

মেডিক্যাল রিপোর্টে পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত সেই নাবালকই এখন ‘সাবালক’?

নীলরতন সরকার হাসপাতালের গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ওই নাবালকের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করেছে। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এ বার পঞ্চসায়র-কাণ্ডে দ্রুত চার্জশিটও দিতে চলেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:১৭
Share:

পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত নাবালক। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত নাবালকের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার রিপোর্ট কলকাতা পুলিশ হাতে পেল। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত নাবালককে ‘সাবালক’ হিসাবে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই।

Advertisement

নীলরতন সরকার হাসপাতালের গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ওই নাবালকের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করেছে। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এ বার পঞ্চসায়র-কাণ্ডে দ্রুত চার্জশিটও দিতে চলেছে পুলিশ। ধৃত নাবালককে ‘সাবালক’ হিসেবে বিবেচনা করে বিচার করার জন্য কলকাতা পুলিশ জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে আবেদন করে। দ্রুত ওই নাবালকের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল বোর্ড। সেই রিপোর্টই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে জমা দেবে লালবাজার। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর জুভেনাইল জাস্টিস কোর্ট ঠিক করবে, তাকে সাবালক হিসাবে গণ্য করা হবে কিনা।

গত ১১ নভেম্বর রাতে পঞ্চসায়রের একটি হোম থেকে বেরিয়ে গণধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এক মহিলা। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে উত্তম রাম নামে এক ট্যাক্সিচালককে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে বয়ানের অসঙ্গতিতে উঠে আসে এক নাবালকের প্রসঙ্গ। তাকেও ওই গণধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, ঘটনার রাতে গাড়িতে ছিল সে। এর পরেই তাকে ‘সাবালক’ হিসাবে বিবেচনা করে বিচার করার জন্য জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে আবেদন করে লালবাজার। তার পরিপ্রেক্ষিতে ওই নাবালকের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিচার করে রিপোর্ট দিতে বলেছিল বোর্ড।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিরাট সঙ্কট ডেকে আনছে ভারত: ইমরান || নিজের দেশে তাকান, জবাব দিল্লির​

কোনও নাবালককে এ ভাবে সাবালক হিসাবে বিবেচনা করা যায়?

২০১২ সালে নির্ভয়া-কাণ্ডে এক নাবালক অভিযুক্ত হয়েছিল। দেশ জুড়ে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠায় জুভেনাইল জাস্টিস আইন বদলানো হয় সংসদে। সংশোধিত আইন বলছে, ১৬-১৮ বছরের নাবালক যদি ধর্ষণ, খুন, অ্যাসিড নিক্ষেপের মতো কোনও গুরুতর অপরাধ করে, তবে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড এবং জুভেনাইল কোর্ট চাইলে তাকে সাধারণ আদালতে বিচারের জন্য পাঠাতে পারে। এপিডিআর-এর তরফে মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘এই আইনের আমরা তীব্র বিরোধিতা করে চলেছি। পঞ্চসায়রের ক্ষেত্রে পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে জুভেনাইল বোর্ড নাবালকের আর্থ-সামাজিক ও মানসিক অবস্থা যাচাই করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শুনেছি। রিপোর্টে যদি দেখা যায়, তার মানসিক পরিপক্বতা (‘ম্যাচিয়োরিটি লেভেল’) সাবালকের মতো তবে তাকে সাধারণ আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হবে। কিন্তু, পুলিশ এই মামলায় নাবালককে সাবালক হিসাবে প্রমাণ করতে চাইছে। ওই রিপোর্টে যদি তাকে সাবালক হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তা হলে আমরা তার তীব্র বিরোধিতা করব।’’

আরও পড়ুন: হঠাৎ গৃহীত বৈশাখীর ইস্তফা, প্রতিহিংসা? ক্ষোভ উগরে প্রশ্ন শোভনের

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গ্রেফতারের পর বিভিন্ন নথি এবং ওই নাবালকের বয়সের প্রমাণপত্র থেকে জানা গিয়েছিল, পঞ্চসায়রের অভিযুক্তের বয়স সতেরো বছরের উপরে। কিন্তু তার অপরাধ বিবেচনা করে পুলিশ তাকে এ মামলায় সাবালক হিসাবেই দেখাতে চাইছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement