বিধানসভার অধিবেশনেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন স্বপন দেবনাথ। ফাইল চিত্র
বাজেট বক্তৃতায় এক তৃণমূল বিধায়কের বক্তৃতা শুনে কেঁদে ফেললেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বাজেট নিয়ে কথা বলতে গিয়েই পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য জানান, লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটা সময় মায়ের বালা বন্ধক রাখতে হয়েছিল। সতীর্থের জীবনের সেই দুঃখের কথা শুনতে শুনতেই কেঁদে ফেলেন মন্ত্রী স্বপন। বিধানসভায় উপস্থিত অনেকেরই চোখে পড়ে, মন্ত্রীর চোখের জল। পরে জানান, নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যাওয়াতেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বাজেট নিয়ে আলোচনায় বক্তৃতা করছিলেন পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। বক্তব্যে টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের কথা।অতীত দিনের স্মৃতিচারণ করে বিধায়ক বলেন, ‘‘হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করার পরে যখন কলেজে ভর্তি হতে চাইলাম তখন ডুবের বছর। ঘরে কানাকড়িও নেই। সুখা-ডুবার বছর কাকেবলে তা আমরা গ্রামে বেড়ে ওঠা মানুষেরা জানি। সেই মার কাকে বলে,আমরা জানি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সেই ডুবার সময়ে মায়ের হাতের বালা বন্ধক রেখে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। আজ কাউকে আর পড়াশোনার জন্য কোনও মায়ের বালা বন্ধক রাখতে হবে না। যাঁদের মায়ের বালা নেই, তাঁরাও ভর্তি হবেন। কারণ, এখন ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড আছে।’’
সতীর্থের এমন কথা শুনে অধিবেশন চলার সময়ই কেঁদে ফেলেন স্বপন। পাশে বসা ট্রেজারি বেঞ্চের অন্য সদস্যদের নজর যায় তাঁর দিকে। সকলে তাঁর কান্নার কারণ জানতে চান। পরে স্বপন বলেন, ‘‘আমার পড়াশোনার জন্য আমার মাও গয়না বন্ধক রেখেছিলেন। যখন এমএ পড়ার জন্য ভর্তি হব বলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই তখন,অর্থের প্রয়োজন থাকলেও মায়ের কাছে তা ছিল না। মা পাড়ার লোকের কাছে ধার চেয়েছিলেন। একজন ২৫০ টাকা সুদে ধার দিয়েছিলেন মাকে। আমি বরাবরই মাকে নিয়েআবেগপ্রবণ। যখন বিধায়ক মানিক নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন মায়ের কথা মনে পড়তেই চোখে জল এসে গিয়েছিল।’’একই সঙ্গে স্বপন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সব ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে উদ্যোগীহয়েছেন। সমাজের কাছে এই উদ্যোগ কতটা প্রয়োজনীয় তা আমরা যাঁরা অনটনের মধ্যে লেখাপড়া করেছি, তাঁরা জানি।’’