পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দ কেরোসিন তারা ঠিক সময়েই দিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি। কিন্তু গোটা অগস্টে রাজ্যের কোনও রেশন দোকানেই কেরোসিন পাননি গ্রাহকেরা! কেন?
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার জানান, রেশনে কেরোসিন বণ্টন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছিল। তাই অগস্টে তেল বণ্টন করা যায়নি। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ যে-রায় দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে সরকার। আপাতত হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে সরকার। মন্ত্রী জানান, অগস্টের বরাদ্দ তেল গ্রাহকেরা অবশ্যই পাবেন। সেপ্টেম্বরে তা মিটিয়ে দেওয়া হবে।
খাদ্যমন্ত্রী হাইকোর্ট দেখালেও কেরোসিনের অভাবে যাঁদের ভুগতে হচ্ছে, তাঁদের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। কেরোসিন না-পেয়ে এ দিনই কলকাতায় বিক্ষোভ দেখান কিছু রেশন গ্রাহক। তাঁদের বক্তব্য, অগস্টে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হয়েছে। অনেকের বাড়িতে রান্নার গ্যাস নেই। বিদ্যুৎও নেই। কেরোসিন না-মেলায় চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে তাঁদের। রাজ্য সরকার অবিলম্বে রেশনে কেরোসিন না-দিলে তাঁদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা কাঞ্চন চৌধুরীর কথায়, ‘‘রান্নার জন্য স্টোভ জ্বালাতে, লন্ঠন জ্বালতে দরকার কেরোসিন। রেশনে তা না-পেয়ে বেশি দামে বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। আমরা জেরবার।’’
ওয়েস্টবেঙ্গল কেরোসিন কনজিউমার্স ফোরামের পক্ষে নিখিলরঞ্জন দে এ দিন জানান, রাজ্য সরকার কেরোসিনের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে। এই নিয়ে একাধিক গ্রাহক মামলা করেন। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, সব রেশন গ্রাহককে মাসে ৫৫০ মিলিলিটার কেরোসিন দিতে হবে। কিন্তু রাজ্য তা মানেনি। অগস্ট থেকে রেশনে কেরোসিন বণ্টনই বন্ধ।
কেরোসিনের বরাদ্দ কিছু ক্ষেত্রে
যে কম, খাদ্যমন্ত্রী তা কার্যত মেনে নিয়েছেন। তিনি জানান, অনেকে কেরোসিন তোলেন না। কলকাতা, সল্টলেক-সহ কিছু শহরে কেরোসিন নেওয়ার লোকই নেই। এমন গ্রাহকদের জন্য মাসে ১৫০ মিলিলিটার তেল বরাদ্দ করা হয়েছে। জঙ্গলমহল, সুন্দরবন, উত্তরবঙ্গের ছিটমহল, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির আদিবাসীদের মাসে এক লিটার করেই কেরোসিন দিচ্ছে রাজ্য। সরকারি নীতি মেনেই এই ব্যবস্থা বলে জানান মন্ত্রী।