সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। ছবি: সংগৃহীত।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর তৈরি সরকারের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। এমনটাই দাবি করলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সোমবার বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায়কে দেখতে তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাসভবনে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী। সেখানেই বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় নৈহাটির বিধায়ককে। দিলীপের অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির কারণে বাংলার বদনাম হচ্ছে। নিজের প্রতিক্রিয়ায় পার্থ বলেন, ‘‘এমন প্রশ্নে আমরা অন্য কথা বলছি। আমরা জিরো টলারেন্সে বিশ্বাসী। মমতা ব্যানার্জি ২০২১ সালে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর থেকে দুর্নীতির অভিযোগ কেউ করতে পারেনি। যদিও সংবাদমাধ্যম সেই বিষয়টিকে প্রচার করে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০২১ সালে সরকার গঠনের পর আড়াই বছর হতে চলল কেউ অভিযোগ করতে পারেনি। যত অভিযোগ হচ্ছে, আগের বিষয়ে। ২০১৭-১৮ ওই সময়ে।’’
নিজের এই বক্তব্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও টেনে এনেছেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘সেই সময় যিনি এই মন্ত্রিসভায় ছিলেন তাঁর নাম শুভেন্দু অধিকারী। যদি ওই মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হয়। তা হলে শুভেন্দু অধিকারীকেও তদন্তের আওতায় আনা উচিত।’’ গত শুক্রবার রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। যিনি ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। আর গত বছর জুলাই মাসের গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়াও শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলে গিয়েছেন তৃণমূলের পলাশীপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও বড়েঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পার্থের মন্তব্য দলের ওই সময়ে হওয়া দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া নেতাদের বিরুদ্ধে। তাতে সহজেই বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেও জড়িয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।
পার্থের ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর তার সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলেছে তৃণমূল। তবে সদ্য ধৃত জ্যোতিপ্রিয় কিম্বা মানিক ও জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে এখনও কোনও কড়া পদক্ষেপ করেননি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই পার্থের এ হেন মন্তব্য তৃণমূলের অন্দরমহলে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলের একাংশে।