মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
গ্রেফতারির পর আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়া মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ভর্তি করানো হয়েছিল হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে সেই ঘটনার পর তিন রাত কেটে গিয়েছে। সোমবার সকালে জানা গেল আপাতত মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে বড় চিন্তার কিছু নেই। তাঁকে রাতেই হাসপাতালের সঙ্কটজনক রোগের চিকিৎসা বিভাগ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। রাখা হয়েছে হাসপাতালের ব্যক্তিগত একক কেবিনে।
মন্ত্রীর অসুস্থতার হদিস পেতে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই সেই সব পরীক্ষার রিপোর্টও হাতে এসেছে। তার পরেই তাঁকে ক্রিটিকাল কেয়ার থেকে বার করে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এখনও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার হতে পারে।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে তাঁর সল্টলেকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ইডি। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু শুনানি চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী । আদালতের নির্দেশেই তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর পছন্দের বেসরকারি হাসপাতালে। তার পরে ওই রাতেই বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয় মন্ত্রীকে।
হাসপাতাল শুক্রবার জানিয়েছিল, সুগারের রোগী জ্যোতিপ্রিয়ের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও। যার পরীক্ষা হওয়া দরকার। রাখা দরকার পর্যবেক্ষণে। এর পরেই শনি এবং রবিবার মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার হল্টার মনিটরিং করা হয়। সঙ্গে হয় এমআরআইও।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার হল্টার মনিটরিংয়ে যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। তবে এমআরআই রিপোর্টে কিছু পাওয়া গিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফে। তবে ওই রিপোর্ট আসার পর ক্রিটিকাল কেয়ার থেকে বার করে আনা হয় মন্ত্রীকে। তাঁকে একটি কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও মন্ত্রীর আরও কিছু শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হওয়া দরকার। সেগুলো এর পর করা হবে। তাই মন্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে কবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই রেশন বণ্টন মামলায় ইডি হেফাজতে যেতে হবে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে। তাঁকে ১০ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। তবে একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, মন্ত্রী সুস্থ হলে তবেই তাঁকে হেফাজতে নিতে পারবে ইডি।
আপাতত বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালেই থাকছেন ইডির কর্তারা। মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খবরাখবরও নিচ্ছেন। রবিবার রাতে তাঁরা হাসপাতালের ভিতরে গিয়ে মন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তখনও হাসপাতালের সঙ্কট বিভাগে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তাই তাঁর সঙ্গে ইডির কর্তাদের কথা হয়নি।
উল্লেখ্য, বেসরকারি এই হাসপাতালে মন্ত্রীর চিকিৎসার খরচ বহন করছে মন্ত্রীর পরিবার। আদালতের নির্দেশেই এই ব্যবস্থা।